ঈদবাজার
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:২১ পিএম
ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড়। প্রবা ফটো
দুই দিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ফুটপাথ থেকে অভিজাত বিপণিবিতান, সর্বত্রই চলছে শেষ সময়ের কেনাকাটা। সাধ্যের মধ্যে সবাই কিনছেন প্রিয়জনের জন্য পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, অলংকারসহ প্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্র। গতকাল সোমবার রাতেও রাজধানীর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। অনেকেই ঢাকা ছাড়বেন, তাই দ্রুত কেনাকাটা শেষ করতে চান।
রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত ফ্যাশন হাউস দেশালের শো-রুমে গিয়ে কথা হয় জয়িতার সঙ্গে। তিনি বলেন, আগামীকাল বাড়ি যাব। কিন্তু এখনও কেনাকাটা শেষ করতে পারিনি। আজ এক শো-রুম থেকে আরেক শো-রুমে ঘুরে পা ব্যথা হয়ে গেছে।
তবে দিনদিন ভিড় অনেকটা কমেছে বলে জানান লেরেভের সেলস এক্সিকিউটিভ মাহমুদুল আলম। তিনি বলেন, এখন যারা আসছে তারা বেশিরভাগই ঢাকার বাসিন্দা। পনেরো রমজান থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত প্রচুর বিক্রি হয়েছে। এ সময় ভীষণ চাপ গিয়েছে। আজ (সোমবার) সকাল থেকে ভিড় অনেক কমেছে।
তবে গত রমজানে এই সময় ভিড়টা যেমন ছিল তেমন নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এ সময় পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট। প্রথমে কিছুটা হতাশ থাকলেও পরে বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
এদিকে রাজধানীর নিউমার্কেট ও ফুটপাথের দোকানগুলোয় দেখা যায় চোখে পড়ার মতো ভিড়। মাকে সঙ্গে নিয়ে দোকান থেকে জুতা কিনছেন তানিয়া আক্তার। তিনি বলেন, সব কেনা শেষ। শুধু জুতাটা কেনা বাকি। আগামীকাল বাড়ি যাব, তাই আজই শেষ করতে হবে।
তবে রয়েছে বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগও। নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, প্যান্ট কেনা দরকার ছিল, কিন্তু দাম তুলনামূলক বেশি। তবুও ঈদ উপলক্ষে অন্য জায়গায় ঘুরে দেখছি সুলভমূল্যে পাওয়া যায় কি না। যে প্যান্ট সাড়ে পাঁচশ টাকা তার দাম এখন চাইছে দুই হাজার টাকা।
নিউ মার্কেটের বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, দাম বেশি চাওয়া হয় না। ভিড় অনেক বেশি এত দামদর করা যায় না। আগে যে দামে বেচতাম তার থেকে দশ-বিশ টাকা বেশি চাই। এ ছাড়া সবকিছুরই দাম বেড়েছে, সেই সঙ্গে পোশাকেরও। এর বাইরে কিছু না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভিড় শুধু পোশাকের দোকানগুলোতেই নয়। রয়েছে জুতা, অলংকার ও কসমেটিকসের দোকানেও। সেখানে কথা হয় রেহানা বেগমের সঙ্গে। ঈদের জামার সঙ্গে মিলিয়ে কানের দুল, ব্রেসলেটা কিনেছেন বাচ্চাদের জন্য। জামাকাপড় আগেই কেনা শেষ। এখন টুকটাক কেনাকাটা বাকি আছে।
নিউমার্কেটের প্যান্টের দোকানের বিক্রেতা রাশেদুল ইসলাম বলেন, মাসজুড়ে ঈদের কেনাকাটা থাকলেও এখনই এই শেষ মুহূর্তে মূলত উপচে পড়া ভিড় হয় প্রতিবারই। এবারও তাই হয়েছে। সময়-দিন যতই গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে বেচাবিক্রি।
ভিড় জমেছে মুদি দোকানে
ঈদের দিন পরিবারসহ অতিথিদের মিষ্টিমুখ করানো রেওয়াজ। রোজার শেষে ঈদ ঘনিয়ে আসতে সেমাই, কিশমিশের দোকানে মানুষের ভিড় চোখে পড়ে। কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের থেকে কম হলেও সেমাই, লাচ্ছা কিনছে মানুষ। ঈদটা সেমাই ছাড়া অসম্ভব বলছিলেন গৃহিণী নিলুফা বেগম। তিনি বলেন, বাসায় অতিথিদের জন্য নিচ্ছি। তবে আগে যে বাজার করতাম এখন তার অর্ধেক বাজার করেছি।
শায়লা জামানের পরিবারে সদস্য ছয়জন। স্বামী বেসরকারি চারকিজীবী। দুই সন্তানসহ শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি বলেন, সেমাইয়ের দামটা ঠিকঠাক থাকলেও কিশমিশ, বাদামের দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। বেশি নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সেমাই দুই কেজি নিয়েছি। গুঁড়ো দুধের কেজি ৮০০ টাকা। বেতনের অর্ধেক এভাবে ঈদবাজার করতেই শেষ। তবুও ঈদ তো আলাদা বিষয়।