প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২৯ পিএম
কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, অসহায়-দুস্থ মানুষদের বয়স্কভাতা ও বিধবাভাতা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পিন নম্বর নিতেন তারা। এভাবে প্রতারণার অভিযোগে নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (৩ এপ্রিল) কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয় সাংবাদিকদের।
র্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানায় বসবাসকারী ইসতাহাদ উদ্দিন সোহান নামে এক তরুণের মোবাইল নম্বরে গত ২২ মার্চ বেলা ৩টা ৩৬ মিনিটে কল দিয়ে তার নম্বরে উপবৃত্তির টাকা পাঠাবে বলে কৌশলে তার বিকাশ হিসাবের পিন নম্বর নেয় তারা। পরে তার হিসাব নম্বর থেকে তারা ৩৮ হাজার ২৫৮ টাকা সরিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তিনি পেকুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তার দুই দিন পর একই এলাকার আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছ থেকে একই কায়দায় ২০ হাজার ৪০০ টাকা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকার লোকমান হোসেনের কাছ থেকে তার ছেলের নামে উপবৃত্তির টাকা পাঠানোর কথা বলে ১৬ হাজার ৩০০ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মোমিন নামে একজন প্রতারণার মাধ্যমে ৪২ হাজার ৭৭৭ টাকা খোয়ান। পরে তিনি ঢাকার ডেমরা থানায় একটি জিডি করেন।
এসব ঘটনার তদন্তে নেমে র্যাব-১০-এর সদস্যরা গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে নয়জনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কক্সবাজার এলাকার ইসমাইল মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই ইব্রাহীম মাতুব্বর, তাদের সহযোগী মানিক ওরফে মতিউর রহমান ও সিনবাদ হোসেন, ঢাকার কেরাণীগঞ্জ ও নারাণগঞ্জ এলাকার সুমন ইসলাম, মাহমুদুল হাসান পলক, সাব্বির খন্দকার, মো. সাকিব, ও রাসেল তালুকদার। তাদের কাছ থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোন, ১২৬টি সিম কার্ড, ১০৪ পিস ইয়াবা ও ৮২ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, তারা প্রথমে ওয়েবসাইট থেকে উপবৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা সংগ্রহ করেন। পরে ক্লোন করা মোবাইল দিয়ে ফোন করেন ইসমাইল। তিনি নিজেকে শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। পরে কৌশলে তাদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওটিপি ও পিন নম্বর হাতিয়ে নিয়ে টাকা সরিয়ে নেন। টাকা আসামাত্রই ইসমাইল তার সহযোগী ইব্রাহীম, মানিক ও সিনবাদের হিসাব নম্বরে পাঠিয়ে দেন। গত এক বছরে প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, তাছাড়া তারা মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের হাজারে ৪ টাকার পরিবর্তে ৮-১০ টাকা লাভ করার বিভিন্ন অফার দিতেন। এক্ষেত্রে এজেন্টরা অফার সম্পর্কে অবগত নন বললে ইসমাইলের সহযোগী সুমন তাদের কাছ থেকে সার্ভিস রিপ্রেজেনটেটিভের (এসআর) ফোন নম্বর নিয়ে ক্লোন করতেন। পরে সেই নম্বর দিয়ে এজেন্টদেরই ফোন করে এসআর পরিচয় দিয়ে বলতেন, উনি আমাদের বস। উনি যেভাবে বলেন সেভাবে কাজ করেন। তারপর সুমন মোবাইলে ওটিপি পাঠিয়ে কৌশলে এজেন্টদের কাছ থেকে হিসাব নম্বরের পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতেন। গ্রেপ্তার আসামিদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই র্যাব কর্মকর্তা।