× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ডেমরায় তরুণের মৃত্যু, মামলা নিতে গড়িমসি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪ ২০:০৬ পিএম

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৭ পিএম

ডেমরা থানা। ছবি : সংগৃহীত

ডেমরা থানা। ছবি : সংগৃহীত

উনিশ বছরের তরুণ মাইনুদ্দিন। ডেমরার বামৈলে মামাত ভাইয়ের বেকারিতে কাজ করতেন। গত ১৩ মার্চ বিকালে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতুর ওপর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের পরনে কোনো পোশাক ছিল না। প্রথমে পরিচয় শনাক্ত না করতে পেরে অজ্ঞাতনামা হিসেবে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশ। এর চার দিন পরে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন মাইনুদ্দিনের স্বজনরা। পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে হলা হয়, মৃত যুবক মানসিকভারসাম্যহীন। ভবঘুরে হয়ে ডেমরা এলাকায় ঘোরাফেরা করতেন। মাইনুদ্দিনের স্বজনদের দাবি, মাইনুদ্দিন সুস্থ ছিলেন। বেকারিতে কাজ করতেন। ভবঘুরে ছিলেন না। তাদের অভিযোগ, মাইনুদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সেতুর ওপরে লাশ ফেলে রেখে আড়ালে থেকে যেতে চাইছে খুনিরা। তাছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা।

মাইনুদ্দিনের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মাইনুদ্দিন দ্বিতীয়। বাবা দুলাল মিয়া ও মা হাফেজা বেগম গ্রামের বাড়িতে থাকেন। 

মাইনুদ্দিনের ভাই হেলাল প্রতিদেনের বাংলাদেশকে বলেন, ডেমরা সরুলিয়ায় আড়াই বছর ধরে মাইনুদ্দিন তাদের মামাত ভাই আকবরের স্বাধীন নামের বেকারিতে কাজ করত। ছয় মাস আগে বামৈলে স্বাধীন বেকারির শোরুমে বদলি করা হয় মাইনুদ্দিনকে। শোরুমটি আকবরের ভগ্নিপতি জাকির পরিচালনা করেন। গত ১২ মার্চ সারাদিন মাইনুদ্দিন শোরুমে ছিলেন। সন্ধ্যার পর তিনি চলে যান এবং ওই শোরুমে আর কাজ করবেন না বলে জানান। তখন জাকিরসহ কয়েকজন মাইনুদ্দিনকে ধরে বাসায় নিয়ে যান। পরদিন ১৩ মার্চ সকালে মামাত ভাই আকবরকে ফোন করে মাইনুদ্দিনকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারে নিয়ে আসতে বলি। তখন আকবর জাকিরের বাসার সামনে যেতে বলেন। আমরা সেখানে গিয়ে মাইনুদ্দিনের খোঁজ করলে জাকির বলেন, মাইনুদ্দিন সকালে বাসা থেকে চলে গেছে। কিন্তু বাসার সামনে মাইনুদ্দিনের জুতা পড়ে থাকতে দেখেছি। পরে মাইনুদ্দিনের মোবাইল ফোন এক মামাত বোন লাইলীর বাসায় পাওয়া যায়।

হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ১৪ মার্চ সারাদিন মাইনুদ্দিনকে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে রাত ১২টার দিকে ডেমরা থানায় ডিজি করতে যাই আমরা। ছবি ও নাম-ঠিকানা দেওয়ার পর পুলিশ বয়স জানতে চায়। তখন পুলিশ বলে, ১৩ মার্চ বিকেলে একটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ছবি দেখতে চাইলে এক পুলিশ বলে, বয়স বেশি। তারা ছবি দেখায়নি। এর মধ্যে তিন দিন ধরে মাইনুদ্দিনের কোনো খোঁজ পাইনি। জিডি হলেও পুলিশ কিছুই জানে না বলে আমাদের জানায়। মাইনুদ্দিনকে খুঁজতে মামাত বোন লাইলী আমাদের গাজীপুরের টঙ্গীতে পাঠান। লাইলী আমাদের বলেন, মাইনুদ্দিনকে জিনে ধরেছে। থানায় মামলা করতে গেলে লাইলীর এক আত্মীয় আমাদের ফোন করে মামলা না করার হুমকি দেন। এরপর ১৭ মার্চ যখন জিডির বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে ফোন করি তখন তিনি বলেন, তিনি কিছু জানেন না। পরে আমরা তাকে জিডির কপি পাঠালে তিনি আমাদের থানায় যেতে বলেন। আমরা থানায় গেলে বলা হয়, আপনার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত হয়েছে। ১৩ মার্চ লাশ আমরা পেয়েছি সেটি মাইনুদ্দিনের লাশ। তাকে তো শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আপনারা মামলা দেন, সন্দেহভাজনদের নাম বলুন। আমরা সন্দেহভাজন হিসেবে মামাত বোন লাইলী, তার স্বামী জাকির, তাদের তিন ছেলে ও মামাত ভাই আকবরের কথা বলি। পুলিশ সাতজনকে ধরে নিয়ে আসে। রাত আড়াইটা পর্যন্ত আমরা থানায় থাকি। পুলিশ বলে, ওদের সকালে আদালতে পাঠানো হবে। আপনারা সকালে আসুন। পরদিন থানায় গেলে পুলিশ পুরো উল্টো আরচণ শুরু করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইকবাল হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে মাইনুদ্দিনের ঘটনা হত্যাকান্ড মনে হয়নি। তার পরও বলব, মনে হওয়া সবকিছু নয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার আলামত থাকতেও পারে। তাই ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিবারের অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণ করতে। এক্ষেত্রে আসামি হবে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। 

ডেমরা থানার ওসি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, মাইনুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধারে পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাতে যদি হত্যার আলামত থাকে তাহলে তারা মামলা নেওয়া হবে। 

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, মাইনুদ্দিনের পরিবার মামলা করে তার স্বজনদের ফাঁসাতে চাইছে। তা হতে দেওয়া যায় না। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা