প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ২৩:৩১ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১২:১৯ পিএম
বহুল আলোচিত সামিট পাওয়ার লিমিটেডের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয় মেয়াদে বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুমতি পেল কোম্পানিটি। তবে বিভিন্ন সমালোচনার কারণে এবার ট্যারিফ কমিয়ে কিলোওয়াট ঘণ্টা ৫ দশমিক ৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৬ দশমিক ৮১ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বুধবার (২৭ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সময় আরও দুটি প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। অনুমোদিত তিনটি ক্রয়প্রস্তাবের অনুকূলে মোট ব্যয় হবে ৬৭৯ কোটি ৮৭ লাখ ৬৭ হাজার ১৫১ টাকা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, আশুলিয়া, মাধবদী ও চান্দিনায় ১০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং ট্যারিফ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্পন্সর কোম্পানি সামিট পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের ১৫ বছর চুক্তির মেয়াদ ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট শেষ হয়।
তিনি বলেন, পরবর্তীকালে আরও পাঁচ বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়, যা শেষ হয় ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট। নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে দ্বিতীয়বার আরও পাঁচ বছর মেয়াদ বাড়াতে বাপবিবো (বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড) সুপারিশ করে।
তিনি জানান, বাপবিবো এবং নেগোসিয়েশন কমিটি কর্তৃক স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুপারিশ করা চুক্তির শর্ত চূড়ান্ত করে তিনটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর থেকে পাঁচ বছর বৃদ্ধির জন্য সামিট পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ৫ দশমিক ৮২ টাকা হিসেবে নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট ভিত্তিতে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, বর্ধিত মেয়াদে (৫ বছরে) স্পন্সর কোম্পানিকে ৫৪৬ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। বর্ণিত প্রস্তাবে ট্যারিফ আগের তুলনায় হ্রাস পাওয়ায় বর্ধিত মেয়াদে প্রায় ৬ দশমিক ৮১ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে।
বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রস্তাবগুলো হলো- ‘ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্পের আওতায় সিপিসি ঠিকাদারের সঙ্গে পঞ্চম সাপ্লিমেন্ট চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় মহেশখালীতে একটি ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ ট্যাংক ফার্ম’ ও গভীর সমুদ্রে একটি ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ এবং ১১০ কিলোমিটার দুটি ডাবল পাইপলাইন স্থাপনের জন্য চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ব্যুরোর (সিপিপিবি) সঙ্গে চারটি সাপ্লিমেন্ট চুক্তি সই হয়।’
পরে সিপিপিবি কর্তৃক দাখিল করা প্রতিবেদন ও পিপিসির সুপারিশ মোতাবেক টেস্টিং ও কমিশনিং কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে যথাযথ শক্তির টাগবোট সংগ্রহ, পাইলটেজ এবং আনুষঙ্গিক সার্ভিস অন্তর্ভুক্তির জন্য চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চুক্তি বাবদ ৫ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬২ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকায় চুক্তির প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
এ ছাড়া ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউডি-১-এর পূর্ত কাজের তৃতীয় ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউডি-১১-এর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে ভারতের মেসার্স ইরকন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।
এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৯০৭ টাকা। চুক্তি অনুসারে কাজ চলমান অবস্থায় কিছু আইটেম কম-বেশি হওয়ায় তৃতীয় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৭০ কোটি ২৩ লাখ ৯২ হাজার ১৫১ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।