প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪ ০১:৪৬ এএম
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৪ ০১:৫১ এএম
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে তাদের কথা শোনেন এনামুল হক বাবুল। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা। প্রবা ফটো
আট চৈত্রের বিকালবেলা। মাটিতে একসমতলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়েছেন। তাদের সবার মধ্যে আছেন একজন সংসদ সদস্য। সাবেক শিক্ষার্থী, যারা এখন বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত; তারাও আছেন সারি করে কাঁধে কাঁধ মিলেয়ে। এ যেন ঢাকায় একখণ্ড অভয়নগর। মিলেমিশে একে অপরকে চিনছেন, জানছেন, যোগাযোগের ঠিকানা-নম্বর দেনদেন করছেন। সম্পর্কের সুতা বেশ বড়ই হলো। অভয়ভূমির সন্তানদের চঞ্চল প্রাণ আর স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিÑ সব মিলে চমৎকার এক বিকাল-সন্ধ্যা। ২২ মার্চ, শুক্রবার। তারুণ্যের সৌন্দর্য মায়াময় করে তোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা।
অভয়নগর উপজেলা যশোর জেলার প্রাচীন জনপদ। সেখানকার মেধাবী সন্তানরা সম্মিলিতভাবে আয়োজন করে বৈকালিক আড্ডা ও ইফতারের। পুরোটাই অনানুষ্ঠানিক, বলতে গেলে ঘাস-মাটিতে একসঙ্গে বসা আর কী! সন্ধ্যা নামে নামেÑ এমন সময় দেখা গেল, আয়োজকরা স্বতঃস্ফূর্ত ব্যস্ত, তবে সব কিছু গোছানো। বটতলায় তখন এই মাটির সন্তান যশোর-৪ আসনে সংসদ সদস্য এনামুল হক বাবুল। তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর। ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেল তাকে। শিক্ষার্থীরা তাকে পেয়ে খুশি। বয়সের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দেখা গেল এনামুল হক বাবুল যেন সব ছাত্র-ছাত্রীকে মুখস্ত করে নিচ্ছেন; অভয়নগরে কার কোন গ্রামে বাড়ি, কে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অথবা এখন কী করছে; জানতে চাইলেন প্রায় সবার কাছে। এ সময় তিনি সব শিক্ষার্থীর উদ্দেশে বললেন, ‘তোমাদের প্রয়োজনে আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবা, যখন দরকার আমাকে ফোন দিতে পারো। আমি তোমাদেরই লোক, তোমাদের সঙ্গেই থাকবো।’
তারপর বসেন একসমতলেÑ সবার সঙ্গে। সূর্যাস্ত ঘনিয়ে এলো। সবার সমানে ইফতারসামগ্রী। সময়মতো গোল হয়ে বসে সবাই ইফতার করলেনÑ সুন্দর সেই দৃশ্য।
দেখা গেল, ইফতারের পর তাদের গল্প যেন বাঁধ ভাঙলো। গুচ্ছ গুচ্ছ হয়ে বন্ধুরা, বড় ভাইয়েরা, ছোট ভাইয়ের কথা বললেন। বর্তমান শিক্ষার্থীদের দিক নির্দেশনা দিলেন জ্যেষ্ঠরা। শোনালেন জীবনমুখী গল্প। অনেকে আবার জন্মভূমি অভয়নগরের কিছু কিছু স্মৃতি টেনে কথা বললেন। তাদের মধ্যে অন্যতম এনবিআরের সাবেক সদস্য কানন কুমার রায়, ব্যবসায়ী জাহিদুর রহমান মিলন, ড. লিঠু মন্ডল, অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার তাপস কুমার দাস, সাংবাদিক রাসেল পারভেজ, বেসরকারি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান কাজল ও ওমর ফারুক, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সহকারী সচিব মেহেদী হাসান খান, আইকর আইনজীবী ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির খণ্ডকালীন শিক্ষক ইমরান গাজী, সরকারি কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজনটির প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন জ্যেষ্ঠ করপোরেট কর্মকর্তা অনিক ইসলাম। আয়োজনটি সফল করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন সৈয়দ সোয়াইব ইমতিয়াজ ইয়াদ, সাজ্জাদ ইসলাম, মোসাদ্দেক হায়াত রুম্মান, রোহান ইসলাম পিয়ান। তাদের সঙ্গে ছিলেন শিক্ষার্থী সাব্বির, মতিন, জান্নাত, অহিসহ অনেকে। আয়োজকদের পক্ষে সাজ্জাদ ও পিয়ান উপস্থিত অভয়নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।
শেষে সবার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সংসদ সদস্য এনামুল হক বাবুল। তিনি ঢাকায় অবস্থানকারী অভয়নগরের সবাইকে মিলেমিশে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ভ্রাত্বের সেতুবন্ধন তৈরি করার পরামর্শ দেন।