বেইলি রোডের ইফতারি মার্কেট
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪ ০০:৪২ এএম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪ ১০:৫৪ এএম
নাটকপাড়া হিসেবে পরিচিতি পেলেও দুই দশকে বেইলি রোডের আরেক পরিচয় ইফতারি বাজারের কারণে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় সারা দেশের মানুষের সামনে বেইলি রোড কেবলই ভয়ের সমার্থক হয়ে উঠেছে। আগুনের সেই ক্ষত এখনও সারেনি। প্রতিদিনকার চিরচেনা আড্ডা আর হুই-হুল্লোড় কিছুই যেন নেই সেখানে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকালে বেইলি রোডের সড়কজুড়ে সেই ক্ষতই চোখে পড়েছে কেবল। চেনা জৌলুসে ফিরতে পারেনি এখনও। প্রথম রমজান থেকেই বেইলি রোড পরিণত হয় ইফতারি বাজারে। সড়কের দুপাশের ফুটপাথগুলোয় বসে অস্থায়ী সব খাবারের দোকান। তবে আগুনের ঘটনায় এবারের রমজানের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। প্রাণহীন এক ইফতারি হাট বসেছে বেইলি রোডে, চারদিকে সুনসান।
বেইলি রোড ঘুরে দেখা যায়, হাতে গোনা কয়েকটি রেস্তোরাঁ ইফতারি বিক্রি করছে। পেঁয়াজু, চপের পাশাপাশি এসব দোকানে মিলছে হরেক পদের ইফতারিসহ নানা মুখরোচক খাবার। যদিও ক্রেতার আনাগোনা চোখে পড়েনি সেভাবে। ফুটপাথে ইফতারি নিয়ে কাউকে বসতেও দেখা যায়নি।
জ্যাগেরি রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা মেলে চাপ, কাবাব, গরুর মাংসের আইটেমসহ নানা আয়োজন। চিকেন সিঙ্গাড়া, কাটলেট, ফিশ ফিঙ্গার, তেহারি, মোরগ পোলাও, কাবাবসহ শতাধিক আইটেমের ইফতারপণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক নাজমুল হোসেন বলেন, প্রথম রোজায় মানুষের যতটা ভিড় থাকে, এবার সেই সমাগম নেই বললেই চলে। মানুষ এখনও আতঙ্কিত। বেইলি রোডের আগুনের ঘটনা ভুলতে পারছে না কেউ। যদিও আমরা আশা করছি, শিগগির আগের মতো স্বাভাবিক হবে সবকিছু।
অন্য বিক্রেতারাও বলছেন একই কথা। তাদের মতে, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ট্র্যাজেডি ভুলে ক্রেতারা আবার বেইলি রোডে আসবেন, এমনটাই ধারণা।
আগুনে পুড়ে যাওয়া কোজি টাওয়ার থেকে একটু সামনে গেলেই এ ওয়ান রেস্তোরাঁ। সেখানেও বিক্রি হচ্ছে মুখরোচক ইফতারি। দোকানের ব্যবস্থাপক পারভেজ বলেন, এখানে যা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক। এবারের ইফতারি বাজার শেষ পর্যন্ত কেমন হয় এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। এবার আমাদের প্রস্তুতিও বেশ সীমিত।
তিনি বলেন, আমরা নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে চাই। পুলিশ, প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ক্রেতারা বলছেন, ইফতারির ভিন্ন স্বাদ নিতে তারা বেইলি রোডে আসেন। আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি সবসময়। তবে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
বিনতি নামের একজন ইফতারি কিনতে এসেছেন বেইলি রোডে। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, অনেকগুলো প্রাণ গেল, তারপর আমরা সচেতন হলাম। আগে সচেতন হলে এমন কাণ্ড ঘটত না। এখন সবাই নিয়মের মধ্যে এসেছে। ফুটপাথে কেউ নেই। আগের মতো ঘিঞ্জি পরিবেশ নেই। এমন ভয়াবহ আগুনের ঘটনা আর না ঘটুক।