প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:৩১ পিএম
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:৩১ পিএম
রাজধানীর বনানী ও মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় পৃথক অভিযানে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সোমবার (১১ মার্চ) এসব অভিযান চালায় সংস্থা দুটি। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে একটি রেস্তোরাঁ বন্ধের নির্দেশসহ ভবনের অবৈধ অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি অনেক ভবন ও রেস্টুরেন্ট মালিককে সতর্ক করা হয়।
বনানীতে দুটি রেস্তোরাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া চারটি রেস্তোরাঁ মালিককে সতর্ক করে নোটিস দেওয়া হয়েছে। বনানীর ১৩-সি সড়কের ৪৮-ই প্লটে তিনতলা একটি আবাসিক ভবনের নিচতলায় বাসাবাড়ি, দোতলায় পাইন উড ও তিনতলায় তাজিন নওয়াবি কুইজিন নামের রেস্তোরাঁ। ছাদে টিনের ছাউনি করে রেস্তোরাঁর রান্নাঘর ও খাওয়ার জায়গা।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, ভবনটিতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি নেই। রেস্তোরাঁ তো কোনোভাবেই চালানোর সুযোগ নেই। আবাসিক ভবন হওয়ায় তারা ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্রের জন্যও আবেদন করেনি। আর সিটি করপোরেশন থেকে নেওয়া যে ট্রেড লাইসেন্স দেখাচ্ছে, সেটি অন্য ঠিকানায় নেওয়া। পাইন উড রেস্তোরাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাজিন নওয়াবি কুইজিন নামের রেস্তোরাঁটি বন্ধ করতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।
এর পাশেই ৫০ নম্বর প্লটে আরেকটি ভবনের নিচতলায় টার্কিশ বাজার নামের আরেকটি রেস্তোরাঁ। ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা প্রথমে লাইট বন্ধ করে সরে গিয়েছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন বলেন, রেস্তোরাঁগুলোর কোনো কাগজপত্র নেই। রমজান মাস শুরুর বিবেচনায় আপাতত আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে। তাদের আবাসিক ভবন ছেড়ে বাণিজ্যিক ভবনে স্থানান্তর হতে হবে। নতুবা ভবনটিকে বাণিজ্যিক অনুমোদন করাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এ দুটি ভবন মালিকের বিপরীতে গৃহকর পরিশোধের তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তারা কীভাবে আবাসিক কর পরিশোধ করে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ভাড়া দিয়েছেন সেগুলো দেখা হবে। ভবন দুটির মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। ১৭ নম্বর সড়কের একটি আবাসিক ভবনের নিচতলায় থাকা টার্কিশ আদানা কাবাব নামের আরেকটি রেস্তোরাঁর আলোকিত সাইনবোর্ড ভেঙে অপসারণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে সতর্ক করে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বনানী ১০ নম্বর সড়কের দি মেজবান লাউঞ্জ, কোল্ড অ্যান্ড কফি, ম্যানুয়ের ক্যাফে রেস্তোরাঁ মালিককে সতর্ক করে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদপুরে রাজউকের অভিযান
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও ভবনে অভিযান চালিয়েছে রাজউক। নকশাবহির্ভূত স্থাপনা, আগুনের ঝুঁকিসহ নানা অনিয়মের দায়ে কেএফসি, মুঘল এম্পায়ার, নবাবী ভোজ ও নূর আলী টাওয়ারকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নকশা অনুযায়ী অবকাঠামো তৈরি না করার প্রমাণ পেয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই সেখানে। এসব অনিয়মের কারণে নবাবী ভোজ ও নূর আলী টাওয়ারকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত, জানিয়েছেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজিনা সারওয়ার।
এরপর তাজমহল রোডের কেএফসিতে অভিযান চালায় রাজউক। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা চালানোর আর কোনো সনদই নেই তাদের। দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। একই ভবনের মুঘল এম্পায়ার নামের আরও একটি রেস্টুরেন্টকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় বেজমেন্টে অবৈধভাবে নির্মাণ করা দোকান ও সিঁড়িও। পাশের ভবনের ছাদে গড়ে তোলা শর্মা ভিলেজ নামের রেস্তোরাঁটি ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। রেস্তোরাঁটির গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।