প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৩ পিএম
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫১ পিএম
দেশে চুরি-ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন পাচার হয়ে যায় ভারতে, আবার ভারতে চুরি-ছিনতাই হওয়া স্মার্ট ফোন চোরাচালানের মাধ্যমে আসে বাংলাদেশে। সংঘবদ্ধ বেশ কিছু চক্র ফোন ছাড়াও শাড়ি, কসমেটিকস ও থ্রি-পিস এনে বাংলাদেশে বিক্রি করে।
বিপুলসংখ্যক চোরাই মোবাইল উদ্ধার ও চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, ‘ডিবির লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এই চক্রের ৯ জন ভারতীয় ও একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, ভারতের নাগরিক রাজা শাও, পঙ্কজ বিশ্বাস, উৎপল মাইটি, দীপঙ্কর ঘোষ, রাজু দাস, সুজন দাস, এস কে আজগর আলী, লারাইব আশ্রাব, সমরজিৎ দাস ও বাংলাদেশি নাগরিক মুরাদ গাজী। তাদের কাছ থেকে ২১টি মোবাইল ফোনসহ চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে আনা বিপুল পরিমাণ কসমেটিকস, শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঁচটি ভারতীয় পাসপোর্ট ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।’
বৃহস্পতিবার সকালে মধ্য বাড্ডা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি দামি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য স্মার্টফোন চুরি-ছিনতাই করে ভারতে পাচার করে আসছিল। আবার ভারতে চুরি হওয়া কিছু মোবাইল ফোন দেশে এনে তারা বিক্রি করত। বুধবার রাতে রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য সম্পর্কে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘মুরাদ গাজী তার বোন ববিকে নিয়ে মধ্য বাড্ডায় নিজের বাসায় অনলাইনে ভারতীয় শাড়ি, থ্রি-পিস, জুতা, স্যান্ডেল, তেল, সাবান, কসমেটিকস, সেক্স পিল ও জেল বিক্রি করে আসছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছে, জব্দ করা মালামাল কোনোটাই বৈধপথে আনা হয়নি। কলকাতা থেকে ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে যে আন্তঃদেশীয় ট্রেন চলাচল করে, সেই ট্রেনে করে তারা দীর্ঘদিন ধরে কোনো ট্যাক্স না দিয়ে ভারতীয় মালামালগুলো চোরাই পথে দেশে এনে বিক্রি করে থাকে।
’গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছে ইতঃপূর্বে তারা কাপড়ের গাট্টির ভেতরে শত শত পিস চোরাই মোবাইল, মদের বোতল ও বিয়ার দেশে এনে বিক্রি করেছে। রমজান মাস ও ঈদের আগে মদ বিয়ার না এনে অবৈধভাবে শুধু কসমেটিকস, কাপড়-চোপড়, জুতা-স্যান্ডেল, সেক্স পিল, জেল এনে তারা মজুদ করছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
১১২টি মোবাইল উদ্ধার করল সিআইডি
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে খোয়া যাওয়া ১১২টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত গ্রাহকের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘১১২টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া মোবাইলে থাকা ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে ব্যাক্লমেইলের ঘটনাও ঘটেছে।’ তাই মোবাইল কেনা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে আরও সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
ঢাকায় নিজ দপ্তরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘সিআইডির সিপিসি পেজে জিডির কপি দেন ভুক্তভোগীরা। এরপর তদন্তের মাধ্যমে এগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।’
মোবাইল উদ্ধারের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান তিনি। এ সময় পবিত্র রমজান মাসে বাজার মনিটরিং বিষয়ে মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, ‘আসন্ন রমজান উপলক্ষে বাজারে নিত্যপণ্য মজুদ ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে মাঠে সতর্ক অবস্থানে আছে সিআইডি।’