× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বই নেই পাঠকও নেই, জমে উঠেছে রেস্টুরেন্ট-টয়লেট ব্যবসা

ফয়সাল খান

প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৯:০২ এএম

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৯:০২ এএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

রাজধানীর আজিমপুরের গোরস্তান রোডের শুরুতেই তিন তলার ছোট্ট একটি ভবন। যে কারও চোখই আটকে যায় কালোরঙের এই ভবনটিতে। এর নামফলকে বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছেÑ ‘আজিমপুর নগর পাঠাগার/এর শুভ উদ্বোধন করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মেয়র, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।’ এর নিচেই লেখা রয়েছেÑ ‘উদ্বোধনের তারিখ : ১৭ ফাল্গুন ১৭২৮ বঙ্গাব্দ, ২ মার্চ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ।’

সে অনুযায়ী, এই পাঠাগার উদ্বোধনের দুই বছরপূর্তি হয়ে গেছে মাত্র ক’দিন আগেই। ভবনটির সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতেই দেখা গেল, পাঠাগারের কক্ষটিতে কয়েকটি চেয়ার টেবিল আছে, তবে কোনো পাঠকই নেই। কক্ষের ভেতর আলমারির তাকে রয়েছে হাতে গোনা ৪-৫টি বই। নেই কোনো পত্রিকা। শূন্য ঘরে বসে আছেন সিটি করপোরেশনের একজন কর্মচারী। 

কর্মচারীর ভাষ্যমতে, এখনও পাঠাগারটি চালু হয়নি। চালু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য তার জানা নেই। এখানে বই পড়ার জন্য মাঝেমধ্যে দুয়েকজন এলেও বই না পেয়ে চলে যান। 

এরপর আরেক তলা ওপরে উঠে দেখা গেল, সাজানো-গোছানো ‘ক্যাফে ডি ওল্ড টাউন মাল্টি কিচেন রেস্টুরেন্ট’। যেখানে প্রায় সব রকম চায়নিজ ও ফাস্টফুডের খাবার বিক্রি হচ্ছে। ছাদের ওপরের জায়গাটিও ব্যবহৃত হচ্ছে রেস্টুরেন্টের কাজে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, নাম দেওয়া হয়েছে পাঠাগার। কিন্তু এটি মূলত রেস্টুরেন্ট ও টয়লেট হিসেবেই ব্যবহার করা হচ্ছে। কেননা রেস্টুরেন্ট ও টয়লেট থেকে তো টাকা আসে। পাঠাগার থেকে তো আর টাকা আসবে না। একজন জানালেন, কাউন্সিলর যদি পারতেন, তা হলে হয়তো দোতলার পাঠাগারও রেস্টুরেন্টের জন্য ভাড়া দিয়ে দিতেন। পাঠাগার থেকে টাকা আয়ের সম্ভাবনা অনেক আগেই চালু হয়ে যেত। 

রেস্টুরেন্ট পরিচালকদের একজন বলেন, ‘আমরা রেস্টুরেন্ট পরিচালনার জন্য এই ফ্লোর ভাড়া নিয়েছি। এ জন্য কাউন্সিলরকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা হারে দুই বছরের জন্য ১২ লাখ টাকা এরই মধ্যে পরিশোধ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘পাঠাগারটির বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। পাঠাগার চালু হলে আমাদের জন্যও ভালো। মানুষ বই পড়তে আসবে। অবসরে এখানে নাস্তা করবে।’ 

ভবনটির ডিজাইন করেছেন স্থপতি রফিক আজম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে আগে পাবলিক টয়লেট ছিল। খুবই নোংরা পরিবেশ ছিল। আমি চিন্তা করে দেখলাম, শুধু পাবলিক টয়লেট করলে জায়গাটা সুন্দর দেখাবে না। তাই এখানে নগর পাঠাগার তৈরি করা হয়েছে। যার নিচতলায় পাবলিক টয়লেট এবং ওপরের তলায় ছোট কফিশপের ডিজাইন ছিল।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে রফিক আজম বলেন, ‘কফিশপ আর রেস্টুরেন্ট কিন্তু ভিন্ন বিষয়। আমার চিন্তা ছিল, বই পাঠের স্থানটির কাছাকাছিই যেন চা-কফি খাওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু রেস্টুরেন্ট বানানোর পরিকল্পনা ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘দুই বছরেও পাঠাগার চালু না হওয়া দুঃখজনক। পাঠাগার চালু করে সেখানে অন্য বিষয় দুটো যুক্ত করা হয়েছে।’ 

ডিএসসিসি ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে পাঠাগারের সবকিছু করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও কেন করেনি, তা আমার বোধগম্য নয়।’

ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাঠাগারটির জন্য ৩ লাখ টাকার বই কেনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে ডিএসসিসির প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা ফার্নিচারসহ সব প্রস্তুত করেছি। কিছু বই কেনা হয়েছে। আরও বই কিনে একটা দিন ঠিক করে চালু করে দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা