× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সরেজমিন : খিলগাঁও

আপ্যায়নে নানা অফার জীবনরক্ষায় উদাসীনতা

আমিনুল ইসলাম মিঠু

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪ ১৩:২৬ পিএম

আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪৯ পিএম

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় আবাসিক ভবনে নকশা পরিবর্তন করে বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করে সেখানে বেইলি রোডের মতো গড়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্টে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়। শনিবার বিকালে তালতলা এলাকায়। প্রবা ফটো

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় আবাসিক ভবনে নকশা পরিবর্তন করে বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করে সেখানে বেইলি রোডের মতো গড়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্টে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়। শনিবার বিকালে তালতলা এলাকায়। প্রবা ফটো

রাজধানীর মালিবাগ থেকে খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকাজুড়ে একসময় ছিল কেবল আবাসিক এলাকা। অথচ এখন এই এলাকাটিতে গড়ে উঠেছে এমন সব সুউচ্চ বহুতল ভবন, যেগুলোতে রয়েছে কেবল নামিদামি রেস্টুরেন্ট, করপোরেট অফিস ও শোরুম। ফলে একসময়ের আবাসিক এলাকা এখন রমরমা বাণিজ্যিক হাব হয়ে উঠেছে। অথচ ভবনগুলোতে নেই নিরাপত্তার বালাই। 

শনিবার (২ মার্চ) রাজধানীর খিলগাঁওয়ের চৌধুরী পাড়া থেকে তালতলা ঘুরে দেখা গেছে, এই এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন বহুতল ও সুউচ্চ ভবনজুড়ে রয়েছে কয়েক শতাধিক রেস্টুরেন্ট, শোরুম ও অফিস। তবে রেস্টুরেন্টগুলোকেই বেশি চোখে পড়ে নান্দনিক ও বাহারি সাইনবোর্ড এবং ডেকোরেশনের কারণে। কয়েকটি রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেল গোছানো ও ছিমছাম পরিবেশ। দিনের বেলা বলে অবশ্য অতিথির সংখ্যা বেশ কমই ছিল। সুন্দর করে সাজানো-গোছানো এসব রেস্টুরেন্ট। আয়োজনে কোথাও কোনো কৃপণতা নেই। বাহারি খাবারে রয়েছে উল্লেখযোগ্য অফার। তবে শুধু মানুষের জীবনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই যেন কোনো আয়োজন নেই। রেস্টুরেন্টগুলোর ডেকোরেশনে ব্যবহৃত উপকরণগুলোয়ও রয়েছে আগুনের ঝুঁকি।

বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মূলত সন্ধ্যার পর থেকে জমে ওঠে এ এলাকা। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরাই বেশি আসেন এসব রেস্টুরেন্টে। অনেকে আসেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, জন্মদিন, আকিকা ও গেট টুগেদার করতে এসব রেস্টুরেন্ট ব্যবহার করেন রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ, বাসাবো, মগবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা বাসিন্দারা।

রেস্তোরাঁ হয়ে উঠেছে বিনোদনের কেন্দ্র 

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় জনসংখ্যা এখন ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এ নগরের নাগরিকদের বিনোদনের ক্ষেত্র খুব কম। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় রেস্তোরাঁ শিল্পের বিকাশ হওয়ার এটি একটা অন্যতম কারণ। সন্ধ্যার পর আড্ডার জায়গা হিসেবে ছোট-বড় এসব রেস্টুরেন্ট বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গোছালো পরিবেশে বন্ধু ও পরিজনদের সঙ্গে দেখা করা, আড্ডা দেওয়া ও গেট টুগেদারের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে এসব রেস্টুরেন্ট। 

খিলগাঁও তারতলার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডারত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ বলেন, এখানে আসি মূলত বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে। সেই সঙ্গে টুকটাক খাওয়াদাওয়া করি। আসলে আমাদের এই শহরে তো কোথাও কোনো খোলা পরিসর নেই। দেখা করা বা আড্ডা দেওয়ার মতো পরিবেশও নেই। রেস্টুরেন্টে এসে খাওয়া ও আড্ডা দুই-ই হয়। এই এলাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রায়ই নানা অফার দেওয়া হয়। সেগুলো কাজে লাগাই আমরা। 

এসব কারণে রাজধানীর বেইলি রোড, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি ও বনানী এলাকার মতো খিলগাঁও এখন রেস্টুরেন্ট হাব হয়ে উঠেছে। এ এলাকার একেকটা ভবনের প্রায় পুরোটা জুড়েই গড়ে উঠেছে রেস্টুরেন্ট। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রেস্টুরেন্ট করার উদ্দেশ্য থেকে এসব ভবন তৈরি করা হয়নি। মূলত আবাসিক ভবনেই চলছে এসব রেস্টুরেন্ট। ভবনগুলোতে প্রবেশ করে দেখা গেল, লিফট যেমন ছোট, তেমনি সিঁড়িগুলোও যথেষ্ট সংকীর্ণ। একসঙ্গে দুজন স্বাস্থ্যবান মানুষ ওঠানামা করা কষ্টকর। জরুরি নিরাপত্তার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থাও দেখা যায়নি।

স্কাই ভিউ নাজমা টাওয়ার 

খিলগাঁওয়ের চৌধুরী পাড়ায় অবস্থিত ১০ তলাবিশিষ্ট স্কাই ভিউ নাজমা টাওয়ারে গিয়ে দেখা গেল, ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোরে চলছে রেস্টুরেন্ট। এটির তিনতলায় অবস্থিত ডি নোভো রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা গেল ছিমছাম পরিবেশ। একটি লিফট সরাসরি এই রেস্টুরেন্টের ভেতরে, অন্যটি সিঁড়ি লাগোয়া। দুটি লিফটই তুলনামূলকভাবে ছোট। সিঁড়ির সামনে র‌্যাম্পের জায়গাও ছোট। এই ভবনটি এবং রেস্টুরেন্টের ভেতরে আগুন নিয়ন্ত্রণে জরুরি কোনো ব্যবস্থা দেখা যায়নি। পাশেই আরেকটি দ্য ডাইনিং লঞ্জ নামের রেস্টুরেন্ট ভবনেও দেখা যায়নি নিরাপত্তাব্যবস্থা। এসব ভবনে নেই জরুরি নির্গমনপথ। 

পরিবার নিয়ে খেতে আসা রিদি হক নামের একজন গৃহিণী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের একাধিক বহুতল ভবনে গড়ে ওঠা নামিদামি রেস্টুরেন্টগুলোর প্রবেশপথ এতই সংকীর্ণ যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বের হয়ে আসা দুঃসাধ্য। তারপরও আমাদের এসব রেস্টুরেন্টেই আসতে হয় খাবার খেতে। আমাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমরা এসব রেস্টুরেন্টেই আসি।’

একটি রেস্টুরেন্টের কর্মচারী পাভেল বললেন, ‘আমাদের রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গ্যাসচালিত চুলা ব্যবহার করে রান্নার কাজ চলে। কোনো বড় ঘটনা এখনও ঘটে নাই। ছোটখাটো-টুকটাক গ্যাস লিক বা আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে সহজেই সমাধান করা যায়। তবে বড় কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে তা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নাই। তখন কী হবে, তা বলা মুশকিল।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা