ধানমন্ডির ‘গাউসিয়া টুইন পিক’
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫৩ পিএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৯ পিএম
দৃষ্টিনন্দন ভবন গাউসিয়া টুইন পিক। ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডে ফেয়ার ফেস কংক্রিট ও গ্লাসে আবৃত বহুতল ‘গাউসিয়া টুইন পিক’ ভবনের ডিজাইনার প্রখ্যাত স্থপতি মুস্তাফা খালিদ পলাশ। তিনি নিজেই এই ভবনে সাধারণ মানুষকে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রকাশ করেছেন অসহায়ত্ব। সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে পোস্টে এই আহ্বান জানিয়েছেন স্থপতি। তার পোস্ট শেয়ার করেছে অনেক নেটিজেন।
ফেসবুকে এক পোস্টে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কেউ যেন সেখানে না যান। পাশাপাশি বিষয়টি স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেইলি রোডের কোজি গ্রিন কটেজ বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৪৬ জন। এ ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে মানুষের মধ্যে।
স্থপতি মুস্তাফা খালিদ পলাশ শুক্রবার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে সবার উদ্দেশে বলেন, ‘দয়া করে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এই ভবন ব্যবহার করবেন না। প্রতিনিয়ত এই ভবনটি নিয়ে সত্যি উৎকণ্ঠায় থাকি। নকশা ও অনুমোদন বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে হলেও এর ব্যবহারে বড় রকমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সার্বিকভাবে অগ্নিঝুকিপূর্ণ রেস্তোরা ভবনে রূপান্তর করা হয়েছে। স্থপতি হিসেবে শেষ যে ক্ষমতাটুকু রাজউক দিয়েছে অকুপেন্সি সার্টিফিকেটের জন্য। সেই রিপোর্ট স্বাক্ষর করার তোয়াক্কাও এখানে করা হয়নি। অকুপেন্সি সার্টিফিকেট না নিয়েই চলছে দেদার ব্যবসা। যেহেতু ভবনটি নির্দিষ্ট ব্যবহারের ব্যত্যয় করে ব্যবহার শুরু হয়েছে তাই স্থপতি হিসেবে রিপোর্ট ও এজবিল্ট ড্রইং প্রদান থেকে বিরত থেকে জমির মালিক ও ডেভেলপারকে বারবার লিখিত বার্তায় এ বিষয়ে সতর্ক করা হলেও কোনো ফলপ্রসূ অগ্রগতি হয়নি। ডেভেলপারকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসে তাদের নাকি ফায়ার লাইসেন্স আছে। কি করে সম্ভব সেটা? কপি চাইলে নিরুত্তর। জমির মালিককে বললে তিনি বলেন, ভাড়া হয় না তাই আর কি করা! তাদের এও জানানো হয় যে, সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবনের স্থপতি হিসেবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করা হবে।’
মুস্তাফা খালিদ পলাশ আরও লিখেছেন, ‘উদ্ভট সব যুক্তির বেড়াজালে একজন স্থপতি হিসেবে নিজেকে অসহায় না ভেবে গত মাসে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগের স্টেশন মাস্টারকে এক বার্তায় এ বিষয়ে অবগত করলে তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে জানান। আমার পরিচিত ফায়ার ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন ডিজিকেও তার ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য অনুরোধ করলে তিনি সাধ্যমতো তা করবেন বলে জানান। আজ আবার স্টেশন মাস্টারকে বিস্তারিত তথ্য লিখলাম। দেখা যাক কি হয়। যতদূর জানি এ ভবনের অগ্নিনিরাপত্তার অবস্থা ক্রমান্বয়ে ভয়াবহভাবে অবনমিত করা হয়েছে। ফায়ার ডোর খুলে ফেলা হয়েছে, ফায়ার স্টেয়ার স্টোররুম হয়েছে, যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়েছে।’
মুস্তাফা খালিদ পলাশ একসময় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি স্থাপত্যবিষয়ক ম্যাগাজিন ‘ডট’-এর সম্পাদক। চিত্রশিল্পী হিসেবেও পরিচিত তিনি।