জ্বলন্ত ট্রেনে আটকা পড়া যাত্রীর বয়ান
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:০৭ এএম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:০১ এএম
ট্রেনের ‘চ’ বগি থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করার সময় জানালায় আটকা পড়েন এক যাত্রী। প্রবা ফটো
‘আমার বাচ্চাসহ স্ত্রী পুড়ে গেছে ভেতরে। আমারও ৯০ শতাংশ প্রায় পুড়ে গেছে। আমি বের হয়ে আর কী করব।’ মৃত্যুর আগে এসব কথা বলে যান বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে নিহত চারজনের মধ্যে একজন। তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসা মাসুদ রানা বলেন, ওই লোক কথা শেষ করতে না করতেই তার শরীরের ওপর ট্রেনের জানালা ভেঙে পড়ে। তিনি আটকে যান।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর গোপীবাগে ট্রেনটিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের আট ইউনিট। রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ১১টা) নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি বাসায় ছিলাম। রেললাইনের পাশেই আমার বাসা। একজন ফোন দিয়ে বলল ট্রেনে আগুন লেগেছে। আমি তাড়াতাড়ি নেমে আসি। এসেই দেখলাম ‘চ’ বগি ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে। এর মধ্যে আমরা দেখলাম একজন জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। আমরাও দূর থেকে বাঁশ দিয়ে জানালাটা সরানোর চেষ্টা করছিলাম, যাতে সে বের হতে পারে। বাইরে থেকে আমরা চেষ্টা করছিলাম তাকে বের করার জন্য। কিন্তু আমরা তাকে বের করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। কারণ সবকিছু অনেক গরম। যার ফলে ধরা যাচ্ছিল না কিছুই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে ‘ছ’ বগিতে আগুন ছড়িয়ে যায়। স্থানীয়রা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে নেভাতে দুটি বগিই জ্বলে যায়। সবাই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করছি। দুটিই এসি বগি ছিল। যার কারণে বেশি উত্তপ্ত ছিল। এর পাশেই ছিল পাওয়ার ক্যাবলের কার বগি। রেলওয়ের কর্মীরা এসেও খুলতে ব্যর্থ হয়।’
যশোরের বেনাপোল থেকে যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ঢাকায় আসছিল। কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর অল্প কিছু আগে গোপীবাগ কাঁচাবাজারের সামনে ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।