প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৪০ পিএম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:২১ পিএম
রাজধানীর বনশ্রীর হোসেন মঞ্জিলের ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আসমা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় ধোঁয়াশা কাটছে না। ছয় তলা বাড়ির ওই ছাদ থেকে পড়ে আসমার মৃত্যু হলেও এটি আত্মহত্যা, হত্যাকাণ্ড নাকি দুর্ঘটনা—তা সোমবার (১ জানুয়ারি) পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আসমা বেগমের কিছু পারিবারিক ঝামেলা থাকার তথ্য তারা পেয়েছে। ছয় তলা থেকে পড়ে আসমার মৃত্যু হলেও সেটি কীভাবে ঘটেছে, তা খুঁজে বের করতে পুলিশ বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
এদিকে এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রামপুরা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। অন্যদিকে গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
বরিবার সকালে বনশ্রী এলাকার ডি-ব্লকের চার নম্বর সড়কের ৩২ নম্বর বাসার সামনে গৃহকর্মী আসমা বেগমের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। সেখানে পুলিশ গেলে উত্তেজিত জনতা তাদের ওপর হামলা করে ও প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে রিজার্ভ পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
এ সময় উত্তেজিত জনতা ৩২ নম্বর বাড়ির গ্যারেজে আগুন ধরিয়ে দিলে তিনটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। আহত হয় নারী ও শিশু। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল ও শর্ট রাউন্ডের গুলি ছোড়ে।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আসমার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে আমরা বাড়ির মালিকসহ অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। আশপাশের যেসব বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে, সেগুলোর ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা হচ্ছে। এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে যে আসমা ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আসমা বেগম বাড়ির মালিক দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে কানিজ ফাতেমা তুবার মিরপুরের বাড়িতে দুই মাস আগে কাজ নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) কানিজ ফাতেমা বাবা দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে এলে আসমাকেও নিয়ে আসে। আসমা সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি, সে কিশোরগঞ্জে তার গ্রামের বাড়ির বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ড করে দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছে। এসব টাকা সে খরচ করে ফেলে, কিন্তু কাউকে সে কার্ড করে দিতে পারেনি। তার ছেলে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এসব ঘটনা নিয়ে আসমা বেগম মানসিক অশান্তিতে ছিলেন।’
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, হোসেন মঞ্জিল নামের বাড়ির মালিক দেলোয়ার হোসেনের বসয় ৭৫। তিনি ভ্যাট-ট্যাক্সেস কমিশনারেট অফিসের সাবেক কমিশনার। তার স্ত্রী অনেক দিন আগেই মারা গেছেন। তার দুই ছেলে একই বাড়িতে থাকতেন। তারা পেশায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ওই বাড়িতে আরও দুজন গৃহকর্মী রয়েছেন, যারা দেলোয়ার হোসেন ও তার দুই ছেলের বাসায় কাজ করতেন। দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে কানিজ ফাতেমার সঙ্গে আসমার কোনো ঝামেলা হয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।