বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৩ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) প্রাঙ্গণে ‘শান্তি ও উন্নয়নবিরোধী সন্ত্রাস মানবে না শিল্পীসমাজ’ শীর্ষক ১০ দিনব্যাপী গণচিত্রাংকন ও প্রতিবাদী চিত্রকর্মের গণপ্রদর্শনীর আয়োজন করেছে পেশাজীবী চারুশিল্পীরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে টিএসসির অভ্যন্তর প্রাঙ্গণে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি শিল্পী অধ্যাপক জামাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী শিল্পী আনোয়ার হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
আরও বক্তব্য রাখেন ঢাবির চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক দুলাল গায়েন, শিল্পী শামসুল, শিল্পী সুনীল কুমার, শিল্পী আনোয়ার হোসেন, শিল্পী দুলাল চন্দ্র গায়েন, সনজিত দাস অপু প্রমুখ।
চারুশিল্পীরা বলেন, ‘দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নবিরোধী অপশক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী রাজনৈতিক জোটের সাম্প্রতিক সন্ত্রাস ও নাশকতায় নারী ও শিশুসহ দেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্য, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগের শিকার হচ্ছে। অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স ও হাসপাতালে, পাশাপাশি দেশ ও দেশের বাইরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের মর্যাদা ও সুনাম। আমরা এই অপরাজনীতির অবসান চাই।’
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘যারা রাজনীতির নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে সাধারণ মানুষ পুঁড়িয়ে মারে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায়, স্বাধীনতার নামে যথেচ্ছা করে তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের বিরুদ্ধে সহিংসতা চলছে৷ সাধারণ নিরীহ মানুষকে অগ্নিসন্ত্রাসের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, গাড়ি পুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, রেললাইন উপড়ে ফেলা হচ্ছে, ট্রেনের বগির ভেতরে আগুন লাগানো হচ্ছে তাতে শিশু ও মা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেলেন তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। একবিংশ শতাব্দীতে এসে এসব ঘটনা কল্পনা করতেও আমাদের কষ্ট হয় যে কীভাবে এসব ঘটনা ঘটছে।’
এই ঘটনাগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অগ্নিসংযোগকারীসহ নেপথ্যে থাকা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেসকল রাজনৈতিক দল একটা দেশের সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে পারে যারা তারা কোনোভাবেই সুস্থ রাজনীতি করছে না, তারা অপরাজনীতি করছে। অগ্নিদগ্ধ করে মানুষকে হত্যা করার স্বাধীনতা কে হত্যাকারীদেরকে দিয়েছে? এটি স্বাধীনতার নামে যথেচ্ছাচার। এই ধরনের রাজনীতি বাংলাদেশে কোনোভাবেই কাম্য নয়। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে যারা রাজনীতির নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে সাধারণ মানুষ পুঁড়িয়ে মারে তারা এদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। এদেশে যারা রাজনীতি করবেন তাদেরকে স্বাধীনতার মৌল বাণী- মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দর্শনকে ধারণ করে এদেশে রাজনীতি করতে হবে। এর বাইরে স্বাধীনতার বাইরের কোনো শক্তি এদেশে রাজনীতি করুক আমরা সেটা চাই না।
আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা আগুন সন্ত্রাস করছেন তাদেরকে বলছি, অগ্নি-সন্ত্রাস বাদ দিয়ে দেখেন আপনাদের পেছনে কেউ নাই। যারা মানুষকে পুড়িয়ে মারে দেশের মাটিতে তাদের স্থান হতে পারে না। রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে তাদের অংশ না নেওয়ার পক্ষে আইন করা দরকার। তারা যেভাবে মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করছে, যানবাহনের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার জন্য জনসাধারণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। পরেই তাদেরকে মাঠে নামার অধিকার দেওয়া হোক। যারা এই সন্ত্রাসকে এগিয়ে নিচ্ছে তাদের নিঃশেষ করার আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন আমরা করে যাবো।