প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:২৯ পিএম
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৯ পিএম
সম্মিলিত নাগরিক সমাজ আয়োজিত গোলটেবিল অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি : সংগৃহীত
বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরতার কারণে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
তারা বলেন, জনগণের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে রাজনৈতিক পক্ষ যখন কোনো বিদেশি শক্তিকে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য ডেকে আনে, বিদেশি দূতাবাসে ধর্না দেয় এবং বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে, তখন বিদেশি শক্তিবর্গ নিজেদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ অর্জনের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সবকিছু করে ও বলে এবং তার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। বহিঃপ্রকাশ ঘটে চরম রাজনৈতিক দায়িত্বহীনতার। যুগে যুগে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জনগণ নয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের চরম ক্ষমতালিপ্সার কারণে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট হয়েছে।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা’ শীর্ষক গোলটেবিলে এসব কথা উঠে আসে। গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ। এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশ গড়ার মূল দায়িত্ব হচ্ছে রাজনীতিকদের। দেশের উন্নয়নও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় হয়। এ জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা থাকে না।’
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার চেতনায় দেশে ও দেশের বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ এলে তা মোকাবিলা করতে হবে। যারা এই চেতনায় বিশ্বাস করে না, তাদের দ্বারা ক্রমে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বেড়েই চলেছে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ধরে রাখার জন্য জাতীয় ইস্যুতে সবাইকে এক হতে হবে।
রাজনীতিবিদরা নিজেদের স্বার্থের দিকে বেশি নজর দেন উল্লেখ করে কাজী খলীকুজ্জমান । তিনি বলেন, নিজেদের স্বার্থের চেয়ে জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তাদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে বলে মনে করি না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সমাজের কোনো কোনো জনগোষ্ঠী তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। কোনো সংগঠন যখন নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারে, তখনই প্রশ্ন ওঠে যে তার ক্ষমতা নেই, শক্তি নেই। অন্য কেউ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়, তখন বলা যায়, সংগঠনটি ভালো সংগঠন নয়। বাংলাদেশে কোনো কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নিজেরাই প্রশ্নের মুখে পড়বে যে তারা নিজেরা অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
গোলটেবিল অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার। তিনি বলেন, গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে জ্বালাও-পোড়াওয়ের যে রাজনীতি চলছে, তার শুরুই হয়েছে গণতন্ত্রকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে। জনগণের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে রাজনৈতিক পক্ষ যখন কোনো বিদেশি শক্তিকে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য ডেকে আনে, বিদেশি দূতাবাসে ধর্না দেয় এবং বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে, তখন স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ম. হামিদ, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন প্রমুখ।