প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:২৬ পিএম
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:০২ পিএম
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন স্বজনরা। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা লিয়ন হক ও রাজিব হাসানের বোন বলেন, ‘আমার দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এক ভাইকে পুলিশ এক মাস গুম করে পরে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। আমার পরিবার সদস্যদের গ্রেপ্তার-গুম-খুন করে সরকার তছনছ করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এক বছর আগে আমার ভগ্নিপতিকে লক্ষ্মীপুরে র্যাব গুলি করে মেরেছে। তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। শেখ হাসিনা সরকারকে বলব, যদি আমার এবং আমার পরিবারের বাঁচার অধিকার না থাকে তাহলে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে মেরে ফেলুন, একজন একজন করে কষ্ট দিয়ে মারবেন না। আমরা বিএনপির রাজনীতি করে অপরাধ করেছি, আমরা পুরো পরিবার এখন মরতে চাই।’
বিএনপির গুম ও গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের স্বজনেরা তাদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন তারা।
মানববন্ধনে ২০১৩ সালে গুম হওয়া বিএনপি নেতা কাউসার হোসেনের স্ত্রী মিনা আক্তার বলেন, ‘আমার সন্তানের বয়স ১৩ বছর, সে বুঝ হওয়ার পর বাবাকে দেখে নাই। যখন সে বলে ‘মা আমার বাবার মুখ কি আর দেখতে পারব না?’ তখন আমার বুকটা ফেটে যায়।’
ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা শেখ মনিরুজ্জামানের স্ত্রী বলেন,‘রাত দুইটা বাজে দরজা ভেঙে আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।পুলিশকে কত আকুতি-মিনতি করলাম, যে বয়স্ক অসুস্থ নির্দোষ লোকটাকে না নিয়ে যেতে। কিন্তু পুলিশ বাসায় ভাঙচুর করে নির্দয়ভাবে তাকে তুলে নিয়ে যায়।’
জেলখানায় নিহত বিএনপি নেতার আবুল বাসারের স্ত্রী বলেন, ‘আমি আমার স্বামী হারানোর বিচার চাই, আমার সন্তানকে এতিম করেছে, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে অমানবিক নির্যাতন করেছে। যার ফলে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোথায় যাব! আমার স্বামীর মামলার বাদী পুলিশ, মামলা করলও পুলিশ, সাক্ষীও দিল পুলিশ- এটা কেমন বিচার! আদালতে বিচারকের সামনে এমন অবিচারের প্রতিবাদ করলে বিচারক বলে ‘এখানে আইনের কথা বলবেন না।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহানের স্ত্রী রহিমা শাহজাহান মায়া বলেন, ‘আমার স্বামীকে দুই বছরের জন্য জেল দিয়েছে, তার কোনো দোষ নাই, আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে-আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুক।’
ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা আবদুল হাই ভুঁইয়া বলেন, ‘আমার তিন ছেলে ও এক ছেলের বউকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করে অমানুষিক নির্যাতন করছে জেলে, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের দেখতে গেলেও আত্মীয়স্বজনকে আটকে থানায় হয়রানি করছে পুলিশ। আমি দেশে-বিদেশের বিবেকবান মানুষকে বলতে চাই; আমরা কীভাবে দিন কাটাচ্ছি, একটু চিন্তা করুন।’
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকার বাংলাদেশের ভোটাধিকারের পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এমন মাত্রায় দমনপীড়ন চালাচ্ছে যে-ফিলিস্তিনের গাজার মতো মানবাধিকার ও মানবিক বিপর্যয় চলছে।
রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের মেয়ে ব্যারিস্টার তাবাসসুম বলেন, ‘আমার বাবা গুরুতর অসুস্থ, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত! অথচ তাকে মুক্তি না দিয়ে জেলে ভরে রেখেছেন, আমার বাবার মুক্তি চাই।’