প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৩৫ পিএম
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০৯ পিএম
মঙ্গলবার মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ। সংগৃহীত ছবি
বিচারক ও আইনজীবীদের ভয় দেখাতে আদালতে ককটেল হামলা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ’আগুন লাগানোর পর লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছেও সেই ছবি-ভিডিও পাঠানো লাগত।’
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, ’সোমবার বিএনপি মহাসচিবের জামিন আবেদনের শুনানি ছিল। সেখানেও নাশকতাকারীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য, বিচারকদের ভয় দেখানোর জন্য চার তলা থেকে ককটেল নিক্ষেপ করে। যদিও এতে কেউ হতাহত হয়নি। ডিবি টিম তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এনেছে। এ ছাড়া উপস্থিত অন্যান্যদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
তিনি বলেন, ’যারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ককটেল নিক্ষেপ করতে পারে, বাসায় হামলা করতে পারে, তারা আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। কারা এসব কাজ করেছে আমরা সবার নাম পেয়েছি।’
সামনের দিনে আরও বড় হামলার আশঙ্কা আছে কি না, আর নাশকতার নির্দেশনা দেশের বাইরে থেকে এসেছে কি না, জানতে চাইলে গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, ’নাশকতার সঙ্গে জড়িত অনেককে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তারা স্বীকার করেছে, আগুন লাগানো তাদের দায়িত্ব। নির্দেশনা আছে আগুন লাগানোর পরে সিনিয়র নেতাদের কাছে ছবি-ভিডিও পাঠানোর। তার মধ্যে তারা লন্ডনের কথা বলেছে, ঢাকায় সিনিয়রদের কথাও বলেছে; সবার কথাই বলেছে।’
নাশকতাকারীরা আগুন লাগানোর পরে অনুতপ্ত কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ’নাশকতাকারীরা অনেক দিন ধরে এই কাজ করছে। তারা জানতে চায় এটার শেষ কোথায়। বাসে আগুন লাগাচ্ছে, ককটেল নিক্ষেপ করছে। তাদের অনেকে গ্রেপ্তার হচ্ছে। কিন্তু তাদের জামিনের জন্য কেউ কাজ করছে না। এমনকি যে বাসে আগুন লাগাচ্ছে সে গ্রেপ্তার হলে তাকে জামিন করতে কেউ এগিয়ে আসবে কি না, এই বিষয়টি ভেবেই তারা হতাশা প্রকাশ করেছে।‘
তিনি বলেন, ’তবে সাধারণ মানুষের সম্পদে আগুন লাগিয়ে দেখিয়ে বেড়ানোর মতো ঘটনা না। এখানে একজন মানুষের জীবন-জীবিকার প্রশ্ন। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এই নাশকতা পছন্দ করছে না। আমরা বারবার বলেছি, নাশকতা সৃষ্টি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে পুলিশ পিছিয়ে যাবে না। বড় ভাইদের খুশি করা বা কোনো পদে বসার জন্য এই কাজ করা ভুল, এটা ফৌজদারি অপরাধ। তাই এই কাজ করে তারা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
এদিকে ৪ নভেম্বর নিউমার্কেট থানাধীন গাউছিয়া মার্কেটে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মিরপুর সুপার লিংক লিমিটেড বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর (ডিবি) গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগ। তারা হলেন, তানভীর আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন ও মো. ফারুক হোসেন।
তাদের মধ্যে তানভীর আহমেদ ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পাঠাগার সম্পাদক। দেলোয়ার হোসেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ও ফারুক হোসেন বিএনপির সক্রিয় সদস্য।
তাদের বরাত দিয়ে হারুন বলেন, ’তানভীর বলেছেন, আগুন লাগানোর পর সিনিয়র নেতাদের ভিডিও পাঠাতেন। লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছেও ছবি-ভিডিও পাঠানো লাগত।’