ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৪৩ পিএম
বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালাচ্ছেন এক চালক। ছবি : আলী হোসেন মিন্টু
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ঢাকায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকেই চরম ভোগান্তিতে পড়ে কর্মজীবী মানুষ। তা ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা পরীক্ষার্থীরাও পড়েন বিপাকে। খেটে খাওয়া মানুষদের আয়-রোজগারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ছুটি থাকায় সরকারি চাকুরিজীবিদের তেমন কর্মব্যস্ততা না থাকলেও বাজার করাসহ সপ্তাহজুড়ে জমানো কাজ সারতে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে অনেককে। অনেক চাকুরিজীবী পড়েন ভোগান্তিতে। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নগরীর রিকশা চালকসহ খেটে খাওয়া মানুষ। সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় খেটে খাওয়া মানুষদের আয়-রোজগারে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় শুক্রবার জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে যায়নি। তবে বিকালের দিকে বৃষ্টি কম হওয়ায় মার্কেট ও বিপনীবিতানে কিছু মানুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। ফলে যাত্রী না পেয়ে অনেক রিকশা ও সিএনজি চালককে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। গণপরিবহনগুলোতেও যাত্রীদের তেমন ভিড় ছিল না।
সকাল থেকেই রাজধানীর শাহবাগসহ বিভিন্ন সড়কে ঘুরে ঘুরে যাত্রী খোঁজেন রিকশা চালক আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তায় মানুষ কম। মাঝেমধ্যে দুই-একজন যাত্রী পেয়েছি। বৃষ্টিতে একটু বেশি ভাড়া চাইলেও অনেকেই রাগারাগি করেন।
তিনি বলেন, রিকশার চাকা না ঘুরলে তো পেটে ভাত আসবে না। জমার টাকা দিয়ে, খাওয়া দাওয়া করে অবিশিষ্ট কিছুই থাকবে না। একই এলাকায় এয়ারপোর্ট-বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিবহনের হেলপার সোহেল জানান, দুপুর পর্যন্ত যাত্রী পাইনি। ১০ থেকে ১৫ জন নিয়ে বাস চালাচ্ছি। এই অবস্থা থাকলে জমার টাকাও উঠবে না।
ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে নগরীর বেশি কিছু সড়কে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। এতে অনেকে সিএনজি অটো রিকশার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। শুক্রবার দুপুরে খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিএনজির ইঞ্জন বিকল হয়ে যেতে দেখা গেছে।
চালক সুব্রত বলেন, সম্ভবত পানি গিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে এমন আরও বেশ কয়েকবার হয়েছে।
তিনি বলেন, রাস্তায় যাত্রী কম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিএনজি চালিয়ে জমার টাকাও উঠাতে পারিনি।
অন্যদিকে, প্রতি শুক্রবারই কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে বাড়তি বেচাকেনা হয়। কিন্তু গতকাল ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকার পাশপাশি দুপুরের আগে অনেকে দোকানও বন্ধ ছিলো। এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।
কারওয়ান বাজারে মানুষের বাজার গাড়িতে তুলে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন খলিল ফকির। তিনি জানান, আমরা শুক্রবারের জন্য সারা সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকি। এ দিন সরকারি অফিসারসহ বড় বড় স্যারেরা বাজার করতে আসেন। তাদের সঙ্গে থেকে বাজার করে গাড়িতে তুলে দিলে বাড়তি কিছু বকশিশও পাওয়া যায়। কিন্তু আজ (গতকাল) প্রায় সবাই বসা (কাজ নেই)।
ইডেন মহিলা কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সোনিয়া আক্রার জানান, বৃষ্টি হলেই কী করব, পরীক্ষাতো দিতেই হবে। সকালে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে আসার সময়ও বৃষ্টি। পরীক্ষা শেষে বের হয়েও দেখি বৃষ্টি। এই বৃষ্টির মধ্যে রিকশা ও সিএনজি ওয়ালারাও বাড়তি ভাড়া ছাড়া যেতে চায় না।