প্রবা প্রদিবেদক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০০ পিএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২১:১৭ পিএম
মেঘের ধাক্কার আয়োজনে বইয়ের ফেরিওয়ালা পলান সরকার স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় ‘বই বিনিময় উৎসব’। প্রবা ফটো
‘পাঠাগার কি সেটাই এখন মানুষ বুঝতে পারে না। অনেক লোক বই পড়বে, ভালো মানুষ হওয়ার জন্য সাধনা করবে। তবেই একটি পাঠাগারের উদ্দেশ্য সফল হবে’, বলছিলেন কুড়িগ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর জয়নাল আবেদিন। যার নেশা বই পড়া।
কুড়িগ্রামে নিজের তৈরি করা পাঠাগার নিয়ে তিনি আরও বলেন, ’পাঠাগারটি যদি শিক্ষার আলো নিয়ে আলোকিত মানুষ তৈরি করে তবেই উদ্দেশ্য সার্থক হবে। পাঠাগার পরিচালনা করার সংকট থেকে বড় সংকট—এখন কেউ বই পড়ে না, পাঠাগার সম্পর্কে জানে না।’
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মেঘের ধাক্কার আয়োজনে বইয়ের ফেরিওয়ালা পলান সরকার স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় ‘বই বিনিময় উৎসব’। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছিল। এমন অবস্থায় উৎসবটি হবে কি না শঙ্কায় থাকলেও অনেকেই বৃষ্টিতে বই নিয়ে হাজির হয়েছে উৎসব প্রাঙ্গণে। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করতে বৈরী আবহাওয়ায় কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন দিনমজুর জয়নাল আবেদিন।
জয়নাল পেশায় দিনমজুর হলেও তার নেশা বই পড়া। এ নেশা থেকেই নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন পাঠাগার। যে পাঠাগারে আছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি বই। এমন একজন বইপ্রেমী মানুষকে উৎসবের উদ্বোধক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।
উৎসবের আয়োজক চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান বলেন, ’আমরা যে বার্তা নিয়ে এই আয়োজন করেছি, সেটা যদি শত শত মানুষের পরিবর্তে দুই-চারজন মানুষের কাছেও পৌঁছায়, তাতেও আমাদের উদ্দেশ্য সফল।’
তিনি আরও বলেন, ’সমাজে যখন পচন ধরে, মানবিক অবক্ষয় ঘটে, তখন অন্ধকার নেমে আসে। এ সময় প্রয়োজন আলোর; আর বই হলো সেই আলো। এই আলোর পথের যাত্রী ছিলেন সাদা মনের মানুষ পলান সরকার। তিনি জীবনের সমস্ত কিছু বিকিয়ে দিয়ে প্রতিদিন দশ-বারো কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বিনামূল্যে বই বিতরণ করতেন। পলান সরকার স্মরণে এই আয়োজন প্রতিবছর নিরন্তরভাবে চলতে থাকবে।’
উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় বালা পবিত্র শিল্প গ্রন্থাগারের পক্ষ থেকে উপস্থিত সবার হাতে বই তুলে দেন। এ সময় তিনি অতিথি জয়নাল আবেদিনের হাতেও তার লাইব্রেরির জন্য কিছু বই তুলে দেন।