অবরোধের প্রভাব
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:০৩ পিএম
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:১৩ পিএম
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নেই যাত্রীর চাপ। প্রবা ফটো
বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা অবরোধ ও বাম জোটের অর্ধদিবসের হরতালে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। এতে নির্ধারিত সময়ের অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর লঞ্চ ছাড়ছে। গতকাল বুধবার জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও চলমান অবরোধে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এর প্রভাব পড়েছে লঞ্চটার্মিনালে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সদরঘাট ঘুরে দেখা যায়, চাঁদপুর ও ভোলাগামী লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় নেই। যাত্রী না থাকায় হাঁকডাক করছেন লঞ্চ শ্রমিকরা। ফলে নির্দিষ্ট সময়সূচি ভেঙে লঞ্চ চালাতে হচ্ছে মালিকদের। দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুর, নড়িয়া, মৃদারহাট, ইলিশাসহ বিভিন্ন রুটে ১৫টি লঞ্চ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে। কিছু লঞ্চে যাত্রী কম থাকায় না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এমভি টিপু লঞ্চের কেরানি মো. হাছান বলেন, আমরা লঞ্চ চালাচ্ছি ঠিকই কিন্তু লোকসান গুণতে হচ্ছে। যাত্রী নেই টার্মিনালে, তাই লঞ্চ ছেড়ে গেলেও তেলের দাম উঠছে না।
ঢাকা-হুলিয়ার হাট রুটে চলাচলকারী রাজদূত লঞ্চের মাস্টার বলেন, কম যাত্রী নিয়ে কতদিন চালাতে পারব বুঝতে পারছি না। কোম্পানির লোকসান হচ্ছে। তবুও রুট চালু রাখতে আর সুনামের কারণে লঞ্চ চালাচ্ছি।
ইমাম হাসান লঞ্চের টিকিট কাউন্টারের কর্মী জামিল হোসেন বলেন, সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি ছিল। যাত্রী নেই বললেই চলে। চাঁদপুর দিয়ে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনীর যাত্রী ছিল। জেলা শহরগুলো থেকে মানুষ কীভাবে বাড়ি পৌঁছাবে সেই আতঙ্ক রয়েছে সবার মাঝে।
সদরঘাটের হকাররা জানিয়েছেন, যাত্রী সংকটে তাদের বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে।
ফল বিক্রেতা কবির বলেন, প্রতিদিন যে ফল নিয়ে আসতাম বিক্রি করে চলে যেতাম। এখন আর তা সম্ভব হয় না। সকাল-দুপুর-রাত সদরঘাটের যাত্রীর অবস্থা একই রকম।
লঞ্চমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, যাত্রী না থাকলে আমরা তো আগের মতো আধাঘণ্টা-একঘণ্টা পর লঞ্চ চালাতে পারি না। যাত্রী সংকটের কারণে শিডিউল ভাঙতে হয়েছে। কিছু করার নেই।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বিআইডব্লিউটিএ’র ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর মো. হুমায়ুন কবির বলেন, হরতাল-অবরোধ হলে সাধারণভাবে যাত্রী কম থাকে। তবে আমাদের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। সদরঘাট এলাকায় হরতালের কোনো মিছিল বা পিকেটিং দেখা যায়নি। টার্মিনাল এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বিআইডব্লিউটিএর কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, আজ রাত ১২টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ১০টি রুটে ১৫টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে চাঁদপুরে চারটি, ইলিশায় তিনটি, নড়িয়ায় দুইটি, মূলাদিতে একটি, হাটুরিয়া দুইটি, চরভৈরবিতে একটি, মৃধারহাটে একটি, ঈদগাঁ ফেরিঘাটে দুইটি ও নরসিংহপুরে একটি লঞ্চ গেছে।
এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের হাতিয়া, মুলাদি, চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঘোষের হাট, লালমোহন, বোরহান উদ্দিন, কালাইয়া, ভাষানচর, বেতুয়া, পাতার হাট, ইলিশাসহ ২৫টি রুট থেকে ঢাকায় লঞ্চ আসে ৩৬টি। তবে স্বাভাবিক সময়ে আরও বেশি লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়।