প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:১২ পিএম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:২৮ পিএম
ফাইল ছবি
বিএনপি ও জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর দ্বিতীয় দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিনে যাত্রীশূন্য সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল। সকাল থেকে দুয়েকটি বাস চললেও যাত্রী মিলছে না। এ ছাড়া অধিকাংশই দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। সুনসান নীরব সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা। অন্যান্য দিনের মতো নেই হাঁকডাক। নেই যাত্রীদের কোলাহল। সকাল থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাইনি দূরপাল্লার কোনো বাস। তবে ঢাকা থেকে কুমিল্লা বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুয়েকটি বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ঢাকা চট্টগ্রাম রুটের একটি বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। ফলে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল অনেকটাই ফাঁকা।
সরেজমিন দেখা গেছে, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, জনপথ মোড়ে ও কাউন্টারের সামনে যাত্রী নেই। দূরপাল্লার বাসের কাউন্টার বন্ধ। টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না।
এদিকে সড়কে যানবাহন কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে এসব এলাকায় অবরোধের সমর্থনে কোনো মিছিল-পিকেটিং করতে দেখা যায়নি।
সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে ইউনিক পরিবহনে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই, কাউন্টারে বসে আছেন ইউনিক পরিবহনের দুই টিকিট বিক্রেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, মালিকের নির্দেশ কোনো গাড়ি ছাড়া হবে না। ভোর থেকে একটি বাসও এখান থেকে ছেড়ে যায়নি। এত দামি গাড়ি রাস্তায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নেবে? তাই ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।
ওই এলাকায় হানিফ পরিবহন, ফালগুন পরিবহন, শ্যামলী, সেন্টমার্টিনসহ বেশকিছু পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ দেখা গেছে। কিছু কাউন্টারে শাটার অর্ধেক নামানো দেখা গেছে। আর কিছু কিছু কাউন্টা খোলা থাকলেও বাস বন্ধ রয়েছে তাদের।
ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ম্যান জানান, আমাদের সব গাড়ি চলছে না। শুধুমাত্র ঢাকা যশোর ও ঢাকা-বরিশাল রুটের বাস চলছে। তবে যাত্রী নেই। আমাদের দুপুর ১টার দিকে একটা বাস ছেড়ে যাবে কিন্তু এ পর্যন্ত টিকিট কাটা হয়েছে মাত্র দুটা।
ঢাকা সিলেট সুনামগঞ্জ রুটের মামুন পরিবহনের কাউন্টার ম্যান রবিন জানান, আমরা তো গাড়ি ছাড়তে চাই। গাড়িও প্রস্তুত রাখা আছে। কিন্তু যাত্রী না থাকার কারণে গাড়ি ছাড়তে পারছি না।
এ ছাড়া দেখা গেছে ঢাকা মাদারীপুর রুটের সার্বিক পরিবহনের কয়েকটি গাড়ি ছেড়ে গেছে।
হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যান ফয়সাল জানান, সকাল থেকে তাদের কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মালিক বাস ছাড়তে নিষেধ করেছেন। তবে সকাল থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম রুটের সিডিআর পরিবহনের বেশ কয়েকটি বাস সায়েদাবাদ জনপদ মোড় থেকে ছেড়ে গেছে।’
সায়েদাবাদে শ্যামলী পরিবহনের ৬ নম্বর কাউন্টারের ম্যানেজার মো. নাসির বলেন, ‘সকালে কোনো গাড়ি ছাড়া হয়নি। বিকালের আগে কোনো গাড়ি ছাড়া হবে না। যাত্রীও তো নেই। অন্য সময় সকাল থেকে যাত্রীদের ভিড় থাকে, এখন তো সেটাও নেই। কিছু লোকাল বাস চলছে। বড় কোনো কোম্পানির বাস সেভাবে চলছে না।’
জনপদ মোড়ে কথা হয় চট্টগ্রামের যাত্রী ফারুক হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাস্তাঘাটে চলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ তবুও বিশেষ প্রয়োজনে আমাকে চট্টগ্রাম যেতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের উদ্দেশে সরাসরি এসি কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সিডিএম পরিবহনের একটি বাসে টিকিট কেটেছি সকালে। সেই সকাল ৬টা থেকেই অপেক্ষা করছি। কিন্তু যাত্রী না থাকায় বাসটি ছাড়তে পারছে না।’
সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, ‘যাত্রী হলেই আমরা বাস ছাড়ছি। সকালে কিছু যাত্রী ছিল তাই কয়েকটি বাস ছেড়ে গেছে। আমরা যাত্রী পেলে বাস ছাড়ব। তবে অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’