× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আদালত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া এক জঙ্গিকে অল্পের জন্য গ্রেপ্তার করা যায়নি: সিটিটিসি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:২৬ পিএম

আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:০৯ পিএম

আদালত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া এক জঙ্গিকে অল্পের জন্য গ্রেপ্তার করা যায়নি: সিটিটিসি

ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় একজনকে অল্পের জন্য গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান মো.আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে সিটিটিসি জানতে পারে, মাত্র দুদিন আগে আদালত থেকে পলাতক এক জঙ্গি ওই বাসা থেকে চলে গেছে। তিনি প্রায় এক মাস ওই বাসাতেই অবস্থান করছিলেন।’

রবিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান এ কথা বলেন।

গেল বছরের ২০ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে পলাতক আনসার আল ইসলামের দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সিএমএম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে  পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে জঙ্গি সদস্য মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেয় সহযোগীরা।

প্রায় একবছর ধরে সংগঠনের নেতৃত্বপর্যায়সহ অনেককে গ্রেপ্তার করা হলেও ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গি এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের নায়েবে আমির ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। 

তারা হলেন- আনসার আল ইসলামের নায়েবে আমির সাখাওয়াতুল কবির ওরফে আনিস ওরফে রফিক, সংগঠনের আশকারী বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার ইহসানূর রহমান ওরফে মুরাদ ওরফে সাইফ, বখতিয়ার রহমান ওরফে নাজমুল, ইউসুফ আলী সরকার ও জাহেদুল ইসলাম ওরফে আশ্রাফ।

সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান সময়ে জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে আনসার আল ইসলামই সাধারণত সক্রিয়। সংগঠনটি ঘিরে সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছিল, আমরা মনে করি সংগঠনের আমিরসহ নেতৃত্বপর্যায়ের পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আমরা তা অনেকটাই নিউট্রাল করতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে আদালত থেকে ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কি-না জানতে চাইলে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তাদেরকে নিয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জানতে পেরেছি ওই বাসা থেকে একজন মাত্র দুদিন আগে চলে গেছে। ওই বাসায় সে এক মাসেরও বেশি সময় অবস্থান করছিল। গ্রেপ্তার পাঁচজনের কাছ থেকেও আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। আরও দুই-এক জনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। তাদেরকে রিমান্ডে এনে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কুকি চিনের সহায়তায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রধান শামিন মাহফুজকে আগে আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মাহফুজ জেলখানায় বসে যখন নতুন সংগঠনের পরিকল্পনা করে তখন সমমনা আরও জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিল। মতাদর্শ ও পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে তারা একত্রিত হয়ে নতুন নামে কার্যক্রম শুরু করে। এজন্যই পরে আনসার আল ইসলামের পক্ষ থেকে শামিন মাহফুজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘শারক্বিয়ার ৯৫ ভাগেরও বেশি সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছি। নেতৃত্ব পর্যায়ে যারা আছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা মনে করি শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে শারক্বিয়ার যবনিকা টানতে পেরেছি।’
কুকি চিন ও তাদের নেতৃত্বপর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
আনসার আল ইসলামের বাইরে এখন কোনো সংগঠনের তৎপরতা আছে বলে মনে করেন না সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিছুদিন আগে ইমাম মাহমুদের কাফেলা নামে একটি সংগঠন শারক্বিয়ার মতো পাহাড়ি অঞ্চলে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু সংগঠিত হওয়ার পূর্বেই তাদেরকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। আমরা এমন সংগঠন অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিতে সক্ষম হচ্ছি।’
নির্বাচন সামনে রেখে আনসার আল ইসলামের পরিকল্পনা আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। তবে এটা ঠিক জঙ্গি সংগঠনগুলো এ পরিস্থিতি কাজে লাগাতে চায়। যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্যান্য কাজে মনোযোগ দেয় তখন তারা সদস্য সংগ্রহসহ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এখন আগের মতো পরিস্থিতি নেই, আগে সিটিটিসির মতো ইউনিট ছিল না, যারা শুধু জঙ্গিদের নিয়েই কাজ করবে। তবে আমরা তৎপর আছি, গ্রেপ্তারদেরকে তাদের পরিকল্পনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
আনসার আল ইসলামের গ্রেপ্তার যারা:
সাখাওয়াতুল কবির ২০০২ সালে আনসার আল ইসলামের মাতৃসংগঠন জামিয়াতুল মুসলিমিনে যোগদানের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায়। আনসার আল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা এজাজ কারগিলের মাধ্যমে রেডিক্যালাইজড হয়ে সংগঠনে যোগ দেয়। এরপর থেকে আমির এজাজ কারগিলের সঙ্গেই থাকতেন। এজাজ কারগিল পাকিস্তানে ড্রোন হামলায় মারা যান। এজাজ কারগিল পাকিস্তানে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে কারগিলের মাকে নিয়ে পাকিস্তান গিয়েছিলেন।
২০১৫ সালে ডিবি তাকে গ্রেপ্তার করে, ২০১৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সংগঠনে যুক্ত হয়ে কার্যক্রম শুরু করে। অল্পদিনের মধ্যে সংগঠনের সূরা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। শারক্বিয়ার উত্থানের সময় সাখাওয়াতুলকে আনসার আল ইসলাম থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। এরপর শারক্বিয়ার প্রধান শামিন মাহফুজ ও সাখাওয়াতুলের মধ্যে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। আনসার আল ইসলামের পক্ষ থেকে মিটিংয়ের নেতৃত্ব দিতেন শাখায়াতুল কবির।
আনসার আল ইসলাম যে শারক্বিয়াকে টাকা দিয়েছিল সেই টাকা এবং মাসিক একটা খরচের টাকাও শামিন মাহফুজকে দিতেন সাখাওয়াতুল।
ইছাননূর রহমান সাইফ সংগঠনের আশকারী বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার। ২০ সালে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেক্সটাইলে মাস্টার্স শেষ করে। ২০১৭ সাল থেকে সংগঠনে সক্রিয় হন তিনি। ২০২২ সালে তাকে এ অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাইফ সংগঠনের ফুলটাইম মেম্বার। আত্মগোপনে থেকে আসকারী শাখার অন্য সদস্যদের প্রশিক্ষণ, নতুন সদস্য রিক্রুট কাজগুলো তার নেতৃত্বে হতো।
অপর জঙ্গি বখতিয়ার রহমান, সাভারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ও হোমিও প্র্যাকটিস করতেন। কিছুদিন আগে সিটিটিসি একজনকে রোগী সাজিয়ে তার বাড়িতে পাঠায়। কিন্তু বিষয়টি বুঝতে পেরে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে সে সবকিছু ফেলে আত্মগোপনে চলে যায়। গতকাল অন্যদের গ্রেপ্তারেরর সময় বখতিয়ারকেও পাওয়া গেছে।
আশ্রাফ জয়দেবপুর অঞ্চলের দাওয়াহ বিভাগের প্রধান। ঢাকার আশপাশে আনসার ইসলামের বেশ কয়েকটি সেল রয়েছে। এর মধ্যে সাভার অঞ্চলের একটি সেলের দায়িত্ব ছিল আশ্রাফের। ১৫ সালে ঢাকা কলেজে অনার্স পড়াকালীন সংগঠনে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি ঢাকার একটি স্কুলে তার নিয়োগ হয়েছিল।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা