প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৫৩ পিএম
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৩ ২২:২২ পিএম
জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন। সংগৃহীত ফটো
সরকারি দলের সংখ্যালঘুবান্ধব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে ৪ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও এর নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ঐক্যমোর্চা। এ ছাড়া ৬ অক্টোবর বিকাল ৪টায় রাজধানীসহ সারা দেশে সমাবেশ ও মিছিল করবে তারা।
রবিবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পরিষদের নেতারা। পূর্বঘোষণা অনুসারে এই মহাসমাবেশ ৪ অক্টোবর হওয়ার কথা ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ঐক্যমোর্চার প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ’২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বেশ কয়েকটি ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে। কিন্তু এর মধ্যে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে না আসায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও এর নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চা সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমিকভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় উল্লিখিত কর্মসূচি পালন করা হবে।’
দুর্গাপূজার নিরাপত্তাসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘সরকার চাইলে ঘটবে না, সরকার না চাইলে ঘটবে—এটা এখনকার বাংলাদেশের বাস্তবতা। প্রশাসন, সব রাজনৈতিক শক্তি যেন এক জোট হয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের স্বার্থে রুখে দাঁড়ায়। পূজা চলার সময়ে সবার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা দেখতে চাই। যাতে কোনো গণ্ডগোল না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে। যদিও ইতোমধ্যে মূর্তি ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আর মাত্র তিন মাস বাকি। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ পরাশক্তিসমূহের কূটনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হওয়ায় এ দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিদারুণ উদ্বিগ্ন। কোনো কোনো সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সময়ের মতো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে মদদদান ও পৃষ্ঠপোষকতায় আমরা শঙ্কিত। এ ব্যাপারে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণের সচেতন দৃষ্টি কামনা করছি। আমরা আশা করি, আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দল দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার তাগিদে অধিকতর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের আহ্বানে আগামী শারদীয় দুর্গাপূজার সময়কালে ২০-২৪ অক্টোবর কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রদান থেকে বিরত থাকায় বিএনপির প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকার, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, ওয়ার্ল্ড হিন্দু ফেডারেশনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি বরুণ চন্দ্র সরকার, শারদাঞ্জলি ফোরামের সভাপতি রতন চন্দ্র পাল, ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা স্বপ্না বিশ্বাস, অ্যাড. অপূর্ব ভট্টাচার্য্য, সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য, সুবীর দত্ত, বাপ্পাদিত্য বসু, মঞ্জু রাণী প্রামাণিক প্রমুখ।