তেজগাঁও এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০২ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:২০ পিএম
আইনজীবী ভুবন চন্দ্র শীল। ফাইল ছবি
রাজধানীতে সন্ত্রাসী গ্রুপের হামলার সময় গুলিবিদ্ধ পথচারী আইনজীবী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় অস্ত্রোপচারের পর এখনও তার জ্ঞান ফেরেনি। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে ৩ ঘণ্টার ধরে চলা অস্ত্রোপচারে দুটি গুলির স্প্লিন্টার বের করেন চিকিৎসকরা। তবে তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। তার মাথার ভেতরে স্প্লিন্টার আরও আছে। পরে তাকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
ভুবনের স্বজনরা জানিয়েছেন, কখন জ্ঞান ফিরতে পারে সে ব্যাপারে চিকিৎসকরা তাদের কোনো কিছুই বলেনি। তার চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম অবস্থা পরিবারের।
গত সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তেজগাঁওয়ের বিজি প্রেস থেকে একটু দূরত্বে হঠাৎ একটি প্রাইভেট কারকে ঘেরাও করে ফেলে চারটি মোটরসাইকেলে থাকা সাত-আটজন অস্ত্রধারী। ওই গাড়িতে ছিলেন ঢাকার অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুন, তার দুই সহযোগী খোকন ও মিঠু। অস্ত্রধারীদের দেখেই মামুন কার থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় হামলাকারীরা তাকে ধরে কোপায়। ছোড়া হয় এলোপাতাড়ি গুলি। দুর্বৃত্তদের ওই গুলি গিয়ে লাগে রাস্তার উল্টো পাশ দিয়ে বাইকে করে গন্তব্যে ফেরা আইনজীবী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায়। আহত হন আরিফুল হক ইমন নামের আরেক পথচারীও। এর মধ্যে সন্ত্রাসী মামুন ও আরিফুল চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। তবে আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে আছেন ভুবন। এ ঘটনায় ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীল বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আইনজীবী ভুবনের শ্যালক তাপস মজুমদার গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, অস্ত্রোপচারের পর এখনও জ্ঞান ফেরেনি। কখন জ্ঞান ফিরতে পারে সে বিষয়ও চিকিৎসকরা তাদের সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুলিতে ভগ্নিপতির মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এখনও তিনি শঙ্কামুক্ত নন।
তিনি জানান, রাত পৌনে ৯টার দিকে ভগ্নিপতি ভুবনকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে মাথা থেকে দুটি গুলির স্প্লিন্টার বের করা গেছে। তবে তার মাথার ভেতর আরও স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, ওই গুলি বের করতে গেলে তার ব্রেনের যে ৪ শতাংশ রেসপন্স ছিল, সেটিও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
চিকিৎসার খরচ চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে জানিয়ে তাপস বলেন, প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালের বিল ৬ লাখ টাকা বেশি হয়ে গেছে। এই টাকার জোগাড় কীভাবে হবে তা নিয়ে পরিবারের সবার মধ্যে দুশ্চিন্তা। একদিকে ভগ্নিপতিকে নিয়ে শঙ্কায় আছি। অন্য দিকে চিকিৎসা খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কীভাবে কী করব কিছুই মাথায় ঢুকছে না। ওদিকে ভগ্নিপতির চিন্তায় বোন রত্না রানী শীলের শারীরিক অবস্থাও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।