বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:০৪ পিএম
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৩৬ পিএম
চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও সংগঠন। প্রবা ফটো
চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর প্রয়াণ চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সালাহউদ্দিন জাকীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি একজন গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি অত্যন্ত সজ্জন মানুষ ছিলেন। তার প্রথম ছবি ঘুড্ডি দেশে সাড়া ফেলেছিল। আমাদের চলচ্চিত্র যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, তখন সালাহউদ্দিন জাকীর চলে যাওয়াটা চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার মতো এমন গুণী নির্মাতা একদিনে তৈরি হয় না। তিনি সজ্জন, ভদ্র মানুষ ছিলেন। তার চলনে-বলনে কোনো বাহুল্য ছিল না। নিজেকে জাহির করার প্রবণতা তার মধ্যে কখনও দেখিনি।
নীলফামারী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর বলেন, স্বাধীনতার পরে আমরা যারা সংস্কৃতি অঙ্গনে হাঁটাচলা করতে শুরু করেছিলাম তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন। আমাদের একেকজনের আগ্রহ একেকদিকে ছিলো। কেউ নাটকে, কেউ সঙ্গীতে, কেউ চলচ্চিত্রে কিন্তু আমরা একটি অভিন্ন অঙ্গনে মিলিত হতাম। বাঙালি সংস্কৃতি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মুক্তিযুদ্ধ এই বিষয়গুলো আমাদের সবসময় একসঙ্গে বেধে রেখেছিল। তার কথায় সবসময় প্রবল আত্মশক্তি থাকতো।
তিনি আরও বলেন, চলচ্চিত্র, সৃজনশীলতা নিয়ে তার এক ধরনের পাগলামি ছিল। তার সেই পাগলামিটা আমাদেরও উদ্বুদ্ধ করত। আজকে তিনি চলে গেলেন। আমরা কে কতদিন থাকব জানি না। কিন্তু জাকী চলে যাওয়ায় আমাদের ক্ষতিটা সবচেয়ে বেশি হল। তিনি যেভাবে সবাইকে শক্তি জোগাতেন এবং নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে সবাইকে যেভাবে অনুপ্রাণিত করতেন, সেই জায়গাটি আর কাউকে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। তার অনেক স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে গেল। নতুন প্রজন্ম সেই স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়িত করবে এবং তার মধ্যদিয়েই সালাহউদ্দিন জাকীকে তারা সম্মান জানাবে।
সালাহউদ্দিন জাকীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চার কাজটি যারা করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একটি নাম হলো সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী।
প্রাক্তন সংস্কৃতি সচিব আকতার-ই-মমতাজ বলেন, তিনি নতুন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ করতেন। তার সৃজনশীলতা দিয়ে, নতুন সংযোজনের প্রতি তার যে আগ্রহ, আন্তরিকতা ও চিন্তা ছিল সারাজীবন তিনি কর্মে তা করে গেছেন। তরুণ যারা চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করেন, তাদের অভিভাবকের মতো ছিলেন তিনি। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু চিন্তা-চেতনায় তিনি ছিলেন একেবারে তরুণ। তিনি অনেক স্বপ্ন দেখতেন এবং তরুণদের অনেক স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন। তরুণরা একজন শিক্ষক হারাল।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের আয়োজন করে। সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীর মরদেহে বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, নাট্যচক্র, সম্প্রীতির বাংলাদেশ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট, মুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি, ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ, ঢাকা ডকল্যাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ অন্যান্য সংগঠন।