সাজ্জাদুল ইসলাম, ঢাকা
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৫ পিএম
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:১২ পিএম
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বাস সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন। প্রবা ফটো
সাধারণ যাত্রীদের চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত করতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বাস সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। এই যাত্রায় রাজধানীর খামারবাড়ি থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগছে ২৫ মিনিটের মতো।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রাথমিকভাবে আটটি দ্বিতল বাস দিয়ে সার্ভিসটির উদ্বোধন করেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব আমিন উল্লা নুরী। এ সময় বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর খামারবাড়ি মোড়ে বিআরটিসির দুটি কাউন্টার রয়েছে। সেখান থেকে ঢাকা মেট্রো ব-১৫৫৯০৭ নম্বরের বাসটি দুপুর ১২টা ৭ মিনিটের দিকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিজয় সরণি হয়ে তেজগাঁও ওভারপাসের এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার র্যাম্প দিয়ে উঠে যায় মূল রাস্তায়। এরপর উত্তরার জসীমউদ্দিন গন্তব্যের দিকে বিরামবিহীনভাবে চলতে থাকে দ্বিতল বাসটি।
এ সময় কথা হয় বাসেরচালক সেন্টু মিয়ার সঙ্গে। তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে। আমি ১২ বছর ধরে বাস চালাচ্ছি। এর মধ্যে ঢাকাতে ১১ বছর। এভাবে যানজট ছাড়া এত আরামে কখনও গাড়ি চালাতে পারব চিন্তাও করিনি।’
সেন্টু মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে বলতে ১২টা ৩২ মিনিটের দিকে বাসটি বিমানবন্দরে পৌঁছে যায়। তখন সেন্টু জানান, এক্সপ্রেসওয়েতে তার গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।
উত্তরার জসীমউদ্দিনে যাত্রীদের নামিয়ে আবারও খামারবাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে বিআরটিসির বাসটি। সূচি চূড়ান্ত না হলেও বিআরটিসি বলছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে বাসগুলো, যা ১৫ মিনিট পরপর খামারবাড়ি থেকে জসীমউদ্দিন এবং জসীমউদ্দীন থেকে খামারবাড়ি পর্যন্ত চলাচল করবে।
বিমানবন্দরের কাউন্টার ম্যানেজার আলমগীর হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, উত্তরা থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রথম গাড়িতে যাত্রী ছিল ২৫ জন। তবে ৭৫ আসন সংখ্যার এই গাড়িতে ধীরে ধীরে যাত্রী বাড়বে বলে আশা করছি।
বিমানবন্দর কাউন্টার থেকে খামারবাড়ির টিকিট কেটে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আসকোনা এলাকার বাসিন্দা খালিদ আফসার চৌধুরী। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ৯ বছর অপেক্ষা করেছি এই সুবিধা পাবার জন্য। অবশেষে আজ সেই পথ আমাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এই সুবিধা উত্তরার সমস্ত মানুষের জন্য এক নতুন দিগন্ত।’
সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘সরকার এই বাস সার্ভিস চালুর ফলে ঢাকার যানজট থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। তবে বিআরটিসি যদি এই সেবা সঠিক ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করতে পারে, তাহলে এই রুটে যাত্রীর অভাব হবে না। আশাকরি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখবে।’
মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে এক্সপ্রেসওয়ে দেখেত আসা মিজানুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কেমন সুবিধা নগরবাসী পেতে যাচ্ছে সেটা দেখার জন্য এসেছি। বাসেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে খামারবাড়ি থেকে বিমানবন্দর চলে এসেছি। এখন আবার খামারবাড়ি ফিরে যাচ্ছি। তবে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে মানুষ সত্যি উপকার পাবে। তখন আমরা এক নতুন ঢাকা দেখতে পারব। আর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিচে নামার পর যেন যানজটের সৃষ্টি না হয় সেদিকে ট্রাফিক পুলিশ যেন খেয়াল রাখে।’