প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৪০ পিএম
তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ। জীবনযাত্রার মান নিশ্চিতসহ নারী শ্রমিকদের সঙ্গতিপূর্ণ মজুরি নির্ধারণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমমনা সংগঠনের পক্ষে নারীপক্ষ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন নারীপক্ষের সদস্য রেহানা সামদানী। অপর সদস্য মাহিন সুলতানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার, ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আক্তার প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, গত বছর সিপিডির এক গবেষণায় দেখা যায়, চার সদস্যের পরিবারের মাসিক খাবার খরচ হয় ২১ হাজার টাকার বেশি ও সার্বিক খরচ ৪৭ হাজার ৭৮১ টাকা। তাই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, মালিকদের সামর্থ্য ও কোনো রকম সঞ্চয় না রেখে কেবল খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার বিবেচনায় শ্রমিকের মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের বিকল্প নেই।
তারা আরও বলেন, বর্তমান বাজারে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরা দিশেহারা। ২০১৮-১৯ সালে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণার পর গত কয়েক বছরে বাড়িভাড়া, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিলসহ জীবনযাত্রার খরচ এতই বেড়েছে যে, বর্তমান মজুরি দিয়ে পোশাক শ্রমিকের বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই নারী শ্রমিক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করেন।
বক্তরা বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ, কাজের পরিবেশ, মজুরি, পদোন্নতি ও পেনশন সুবিধাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। খুব কম সংখ্যক নারী পুরুষের সমান সুযোগ-সুবিধাসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ পান। তাদের মজুরি কম, কর্মপরিবেশ নিম্নমানের, অনিরাপদ ও অনিশ্চিত। এ ছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা তার সামগ্রিক অবস্থানকে প্রভাবিত করে। সম্পদ, মজুরি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক উপাদানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা না হলে নারীরা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
দাবিগুলো হলো- অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম সঙ্গতিপূর্ণ শ্রমের মজুরি ঘোষণা, ৬৫ শতাংশ বেসিক নিশ্চিত করা, মজুরি নির্ধারণ না হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ৬০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া, সব গ্রেডে জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মজুরি বৃদ্ধির সুযোগ রাখা, প্রচলিত ৭টি গ্রেডের বদলে ৫টি গ্রেড করা, সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ ও ডাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দেওয়া, সোয়েটারে ৩টি শিফট ও ওভারটাইম নিশ্চিত করা, ইপিজেড ও ইপিজেডের বাইরে সব কারখানায় সমান হারে মজুরি বৃদ্ধি ও মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট, বাধ্যতামূলক অংশীদারত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করাসহ তৈরি পোশাক শিল্পে যেহেতু বেশিরভাগ নারী কর্মরত, তাই মজুরি বোর্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা।