প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৪৭ পিএম
দক্ষিণ কোরিয়ান বৈদ্যুতিক ক্যাবল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলএস ক্যাবল এন্ড সিস্টেম লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৪৮ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দেশীয় কোম্পানিগুলোকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে টাকা পরিশোধ না করে প্রতিষ্ঠানটি এসব টাকা লুট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন কোম্পানিটির লোকাল এজেন্ট বিএনএফ ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন প্রকৌশলী মো. মোস্তফা কামাল।
তার অভিযোগ, পাওনা টাকা চেয়েও তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পাওনা টাকা ফিরে পেতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারী কাজ শেষ করলেও আড়াই বছর ধরে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা আটকে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শ্রমিকরা টাকা না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে প্রকৌশলী মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এলএস ক্যাবল বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সরবরাহ ও প্রতিস্থাপনের কাজ করে আসছে। এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তারা বাংলাদেশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিএনএফ ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের সঙ্গে তাদের লোকাল এজেন্ট এবং সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে চুক্তি সম্পাদন করে। কাজ শুরুর প্রথম দিকে তারা চুক্তির শর্ত মোতাবেক চলমান বিল উত্তোলন করে বিল পরিশোধ করতে থাকে। পরবর্তীতে তারা চলমান বিল পরিশোধ না করে তাদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে জমা করতে থাকে। পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য বিএনএফ ইঞ্জিনিয়ার্সের পক্ষ থেকে একাধিক ইনভয়েস জমা দিলেও তারা কোনো টাকা পরিশোধ করেনি। কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চারটি চুক্তিতে আমাদের প্রায় ৪৮ কোটি টাকা বিভিন্ন খাতে এলএস ক্যাবল অ্যান্ড সিস্টেম লিমিটেডের কাছে আটকে আছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পাওনা টাকা না দিয়ে উপরন্তু এল এস ক্যাবল মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলছে, তারা সরকারের বিভিন্ন কোম্পানি ডেসকো, ডিপিডিসি, পিজিসিবি ইত্যাদি থেকে কোনো বিল পায়নি। তাই তারাও বিএনএফ ইঞ্জিনিয়ার্সকে বিল পরিশোধ করতে পারছে না। সরকারের উপরোক্ত সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, এলএস ক্যাবলের সমস্ত পাওনা টাকা ইনভয়েসের মাধ্যমে অনেক আগেই পরিশোধ করে দিয়েছেন। মূলত এলএস ক্যাবল লিমিটেডের বর্তমান ম্যানেজমেন্ট স্যাম ইউ, হং লী, সৌদীপ, ইমাম ও নাফিসের ব্যক্তিগত আর্থিক সুবিধা লাভ এবং কুটচালের মাধ্যমে বিএনএফের পাওনা টাকা পরিশোধ না করে দিনের পর দিন ঘুরানো হচ্ছে বলে তিনি জানান। এতে কাজের সঙ্গে জড়িত শত শত শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকা না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোাস্তফা কামাল বলেন, এলএস ক্যাবলে চাকরি করা কিছু বাংলাদেশি এলএস ক্যাবলের কোরিয়ানদের ভুল বুঝিয়ে এই প্রতারণা শেখাচ্ছেন। যার কারণে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতারণা করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলএস ক্যাবলের বাংলাদেশিয় একাউটেন্ট মো. ইমাম বলেন, ‘আমি অথরিটির পারমিশন ছাড়া কোনো কিছু বলতে পারব না।’