পুলিশের দাবি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৩ ২১:০৪ পিএম
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৩ ২২:১৩ পিএম
গ্রেপ্তার চক্রটির সদস্যরা পুলিশের হেফাজতে। ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফাঁকা বাসা আগে থেকেই নজরে রাখত একটি চোর চক্র। পরে সময় বুঝে গ্রিল কেটে ও তালা ভেঙে বাসায় ঢুকে চুরি করত। চক্রটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করত। এভাবে চক্রটি দুই বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বাসায় চুরি করেছে। আর চুরি করা ল্যাপটপগুলো তারা রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে বিক্রি করত। সম্প্রতি লালবাগের একটি ভবনের ফাঁকা তিনটি বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে ওই চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সঞ্জীব, হেলাল উদ্দিন, রনি, রিপন, তরিকুল ইসলাম, শামীম ও আরিফুল ইসলাম ওরফে সুমন। শনিবার (২৬ আগস্ট) দিনভর টানা অভিযান চালিয়ে লালবাগ, বংশাল ও পান্থপথ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪৮টি ল্যাপটপ, পাঁচটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।
তিনি বলেন, ‘চুরি করা ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করা হতো। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা প্রথমে বাসাবাড়িতে আগাম খোঁজখবর নিত। বাসা ফাঁকা থাকলে চুরির টার্গেট করত। যে বাসাগুলোতে সিকিউরিটি গার্ড থাকে না, সেগুলোকে টার্গেট করত তারা। ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোর চক্রের চার সদস্যকে শনাক্ত করা হয়। পরে চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে ল্যাপটপ কেনাবেচার কথা জানা গেছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া দুটি ল্যাপটপসহ চোরাই ৪৮টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। দোকানি সুমন গ্রেপ্তার রনির কাছ থেকে কম দামে এসব ল্যাপটপ কিনতেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা শনির আখড়ায় একটি কারখানায় কাজ করত। সেখান থেকে চুরি করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয় তারা। কদমতলী, সূত্রাপুর, কলাবাগ, লালবাগ ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন থানার একাধিক মামলায় তারা গ্রেপ্তারও হয়েছে।
জাফর হোসেন বলেন, বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগালে চুরি থেকে রেহাই মিলতে পারে। চুরি হলেও সহজেই চোর ধরা যাবে। ল্যাপটপ চুরির পর কারও ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও কিংবা তথ্য ফাঁস করা হতো কি না, জানতে চাইলে ডিসি জাফর বলেন, ‘ওই শপিং কমপ্লেক্সের দোকানটি চোর চক্রের কাছ থেকে কম দামে ল্যাপটপ কিনত। এরপর সেগুলো ফরম্যাট দেওয়ার পর উইন্ডোজ দিয়ে বিক্রি করত। তারা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস কিংবা ফাঁসের হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত না।’
লালবাগের গঙ্গারাম বাজার লেন এলাকার একটি বাসায় চুরির ঘটনায় ২২ আগস্ট লালবাগ থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয় এবং লালবাগ থানা-পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
উদ্ধার ৪৮টি ল্যাপটপের মালিকানার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা জাফর বলেন, ‘সিআইডির ল্যাবে ফরেনসিক করে ল্যাপটপের মালিকানার তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর সেগুলো তুলে দেওয়া হবে সঠিক মালিকের হাতে।’