প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৪৮ পিএম
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৬ পিএম
সংবাদমাধ্যমে কথা বলছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ। সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকার অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই সিন্ডিকেটে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, এমনকি তাদের মধ্যে আনসার সদস্যরাও রয়েছে। তারা হাসপাতালে শয্যা নেই বলে প্রচার চালিয়ে ভর্তি হতে আসা মুমূর্ষু শিশুদের বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এটি মুমূর্ষু রোগীদের কেনাবেচার মতো। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মানবাধিকার কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, বিশেষ করে ডেঙ্গু ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ’হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা মুমূর্ষু শিশুদের একটি সিন্ডিকেট বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ এসেছে। সে বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকেও চিঠি দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ’রাষ্ট্রীয় অর্থে এসব প্রতিষ্ঠান বানানো হচ্ছে। কিন্তু মুমূর্ষু শিশু রোগী ভর্তি করতে এসে অভিভাবকদের সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে। শেষে তাদের মৃত সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। রোগীদের এভাবে যারা কেনাবেচা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।’ এ বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতিও আহ্বান জানান চেয়ারম্যান।
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা খরচসহ স্বাস্থ্য খাতের নানা অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে ডেঙ্গু চিকিৎসায় লাখ লাখ টাকা খরচ হওয়া, স্যালাইন–সংকট, স্যালাইনের দাম বেশি নেওয়াসহ নানা খবর আসছে। অভিযোগগুলো তদন্তের বিষয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তা অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে এখানে যে রোগীরা ভর্তি আছেন, তাদের স্বজনরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে যারা ভর্তি হতে পারছেন না, বিশেষ করে মুমূর্ষু শিশু, তাদের জন্য কোনোভাবে হাসপাতালে শয্যা বাড়িয়ে ভর্তি করার পরামর্শ দেন তিনি।
বেসরকারি হাসপাতালে সিন্ডিকেটের রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ’এখানে শয্যা খালি না থাকলে রোগী ভর্তি করা হয় না। কিংবা এক শয্যায় দুই রোগীকেও ভর্তি করা হয় না। তবে মুমূর্ষু কোনো রোগী এলে তাকে জরুরি বিভাগে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রোগীকে অন্য সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। হাসপাতালের ভেতরে কোনো সিন্ডিকেট সক্রিয় নেই। তবে হাসপাতালের গেটের বাইরে রোগীর স্বজনরা সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ছেন। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে সবাই যাতে তৎপর হয়, সেটাই আমরা চাই।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৪ আগস্ট একটি গণমাধ্যমে ‘সার্চলাইট’ নামের অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠানে ‘মুমূর্ষু রোগী কেনাবেচা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। প্রতিবেদনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে।