ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনায় ১৭ নিহত
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৩ ১৫:২১ পিএম
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৩ ১৬:১১ পিএম
ঝালকাঠি সদরের ছত্রকান্দা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়া বাসটির ফিটনেস ভালো ছিল না। দুর্ঘটনার আগে বেপরোয়া গতিতে চলা বাসটির মিটারও ছিল নষ্ট। ৪৫ জনের ধারণক্ষমতার হলেও বাসটিতে বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছিল।
দুর্ঘটনাকবলিত ‘বাশার স্মৃতি’ পরিবহনটির চালক মোহনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি এও জানান, বাসের চালক মোহন হাওলাদারের ভারী যানবাহন চালানোর অনুমতি ছিল না। হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নিয়েই গত তিন বছর ধরে ভারী যানবাহন চালিয়ে আসছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার আশুলিয়া থেকে মোহনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
গত শনিবার সকালে ভাণ্ডারিয়া থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে ঝালকাঠির গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দায় যাত্রীবাহী বাসটি উল্টে পুকুরে পড়ে ১৭ জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে ছিল আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিন শিশু। এতে আহত হয়েছিলেন আরও অন্তত ৩৫ জন।
ঘটনার পরদিন রাতে পুলিশ বাদী হয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করে। এতে আসামি করা হয় দুর্ঘটনার শিকার বাসচালক ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রায়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মোহন, তার সহকারী বরগুনার বাসিন্দা মো. আশিক ওরফে বুলেট ও বাসের সুপারভাইজার ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বাসিন্দা মিজানকে। মামলার পর সোমবার রাজাপুর থেকে বাসটির সুপারভাইজারকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর পর কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে চালক মোহন পালিয়ে ঝালকাঠি চলে যান। সেখান থেকে টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার ও আশুলিয়ায় তার বিভিন্ন আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে থাকেন। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর দল আশুলিয়ায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মোহনকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে বাসের সুপারভাইজার ফয়সাল ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে মালিকদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। এ ঘটনায় চালকের পাশাপাশি মালিকের কোনো গাফিলাতি থাকলে তাকেও আসামি করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে করা মামলায় হেলপার, সুপারভাইজার ও চালককে আসামি করা হয়েছে।’
মোহনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গত ২২ জুলাই সকাল ৯টায় বাশার স্মৃতি পরিবহনের বাসটি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে বিভিন্ন স্টপেজে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়। বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকেন চালক।
‘৯টা ৫০ মিনিটে ঝালকাঠি সদরের ছত্রকান্দা এলাকায় এলে অতিরিক্ত যাত্রী ও বেপরোয়া গতির কারণে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি পুকুরে উল্টে পড়ে ডুবে যায়। এ সময় যাত্রীরা যে যার মতো করে পানি থেকে উঠে আসেন। কিন্তু বাসটিতে অনেকে আটকা পড়েন। এ সময় সেখান থেকে উঠে মোহন দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান।’