নারীপক্ষের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আইভী
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৩ ০০:০৭ এএম
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩ ১১:০৬ এএম
নারী সম্মেলনের সমাপনী পর্বে বক্তব্য রাখছেন অতিথিরা। প্রবা ফটো
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, জয় বাংলা স্লোগানকে আওয়ামী লীগ কুক্ষিগত করেছে। এটা কৃষক, শ্রমিক আম জনতার স্লোগান। আমাদের মতো নারীদের স্লোগান। এটা বলতে আপনারা দ্বিধা করবেন না।
তিনি আরও বলেন, জয় বাংলা ছিল রণাঙ্গনের স্লোগান। আওয়ামী লীগের একক সম্পত্তি না। আওয়ামী লীগ, আপনি, আমি সবার স্লোগান এটা। এই স্লোগান দিয়ে সেই সময় সাহস জোগাত সবাই, এই স্লোগান দিয়ে মাঠে নেমে যাবেন।
শনিবার (১৫ জুলাই) নারীপক্ষের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘মোরা আকাশের মতো বাধাহীন’ শিরোনামে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আয়োজিত তরুণ নারী সম্মেলনের তৃতীয় দিনের সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারীপক্ষের সভানেত্রী ড. তাসনিম আজীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক আফরোজা সোমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নায়লা জামান খান, নারীপক্ষের সদস্য গীতা দাস, ফেরদৌসী আখতার, রীনা রায়সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত তরুণরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নারীপক্ষের সদস্য রেহানা সামদানী।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র বলেন, আমাদের সমাজব্যবস্থা নারীদের সাপোর্ট দেয় না। এখানে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। জয়ী হয়েছি তবু এখনও নানাভাবে যুদ্ধ করেই যাচ্ছি।
নিজের রাজনৈতিক জীবনকে তুলে ধরে সেলিনা হায়াৎ আইভী আরও বলেন, আমি বিদেশ থেকে ফিরে আবার রাজনীতিতে দাঁড়িয়েছি। নমিনেশন চাইতে গেলে দেয়নি। অনেকে বলেছে নারী হয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পারব না আমি। আমার অফিস ঘেরাও করতে চেয়েছে। আমাকে নিয়ে নোংরা কথা লিখে পোস্টার ছাপানো হয়েছে। চরিত্র নিয়েও কথা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি তখন সাহস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম আমি জয়ী হব এবং বিপুল ভোটে জয়ী হব। জয়ী হয়েছি তবে পথটা এত সহজ ছিল না। সমাজের নানা কথা আমাকেও শুনতে হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে মায়ের অবদান অনেক বেশি উল্লেখ করে আইভী বলেন, মায়েদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টালেই মেয়েরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে। কারণ আমাদের পরিবারই সবার আগে সামনে যাওয়ার পথে আমাদের বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
রাশনা ইমাম বলেন, সবকিছু নিয়েই আইন আছে। যৌন হয়রানি রোধ করার জন্যও আইন হয়েছে। হয়রানি নিয়ে রিপোর্ট কেউ করে না। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি যদি ঠিক না হয় আইন থাকলেই কি হবে। পাঠপুস্তকে আগে পরিবর্তন আনতে হবে। গার্হস্থ্য অর্থনীতির বইয়ে আছে আকর্ষণীয় পোশাকের কথা, কি এই পোশাকের বিষয়টা। আমার বোধগম্য হয় না। এর মাধ্যমে একটা মেয়ে ধর্ষণ হলে তার পোশাককে দায়ী করা যাবে। প্রত্যেক নারীর জন্যই সমাজ একটা যুদ্ধক্ষেত্র। তাই সবাইকে কথা বলতে হবে। যার যার জায়গা থেকে নিজের কথাটা অন্তত বলতে হবে।
নায়লা জামান বলেন, যৌন হয়রানির শিকার মেয়েরা কাউন্সেলিং পায় না। শিশুরা কাউন্সেলিং পায় না। শিশুদের জন্য শিশু বিকাশ কেন্দ্রে মনোবিজ্ঞানী রাখার কথা বলেছিলাম। তখন অনেকেই আমার বিরোধিতা করেছেন। যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নারীদের নিয়ে কাজ শুরু করেছি। তাদের ট্রমা নিয়ে কাজ করেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাধা এসেছে। বলা হতো, বিদেশ থেকে নতুন নতুন আইডিয়া আমদানি করেছি। পরে আন্দোলনে নেমেছি। এতটা সহজ ছিল না কোনো পথই, যা পেয়েছি আমরা সবই লড়াই করে পেয়েছি।