প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩ ১২:৪৪ পিএম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৩ ১৫:৪৪ পিএম
জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘সমৃদ্ধ ও সুষম বাংলাদেশ নির্মাণ: বাজেট ২০২৩-২৪’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অতিথিরা। প্রবা ফটো
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘দেশের অর্থনীতি শুধু স্মার্ট নয়, বরং তা হতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক। এবারের বাজেটটি আপতকালীন চ্যালেঞ্জের সময় দেওয়া হয়েছে। কেননা বর্তমানে ভূ-তাত্ত্বিক রাজনীতিতে টালমাটাল অবস্থা চলছে। গত ১৪ বছরের এ সময়ে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ছিল কৃষি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। বাজেটে এসব দিকগুলোকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।’
শুক্রবার (১৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘সমৃদ্ধ ও সুষম বাংলাদেশ নির্মাণ : বাজেট ২০২৩-২৪’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান।
প্রধান আলোচক আতিউর রহমান বলেন, ‘২০০৬ সালের চেয়ে ২০২২ সাল পর্যন্ত কৃষির উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ। সেই সময় ফরেনস রিজার্ভ এক বিলিয়নও ছিল না। বর্তমানে সেটি ৩০ বিলিয়ন হয়েছে। যদিও এর আগে ৪০ বিলিয়নের ওপরে চলে গিয়েছিল। এ সময়ে রপ্তানি ১০ বিলিয়ন থেকে ৫৩ বিলিয়ন হয়েছে। অর্থাৎ এসব উন্নয়ন হয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর বাজেট বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। কেননা এটি নির্বাচনের বছর। অক্টোবর থেকে নির্বাচনী হাওয়া বইবে। অনেক কাজ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। গত ১৫ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এ বাজেটটিকে আমরা ভবিষ্যৎমুখী হিসেবে মূল্যায়ন করতে পারি।’
সাবেক গভর্নর বলেন, ‘ডিমান্ড ও সাপ্লাই দুই দিক থেকে মূল্যস্ফীতি আঘাত হানে। বাজার ঠিক রাখতে ছোট ছোট এলসি খুলতে সহায়তা দিতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা পাইপলাইন খুলে দিতে হবে। রাষ্ট্র, সমাজ ও মার্কেট তিনটি স্তম্ভ ঠিক রাখতে হবে। বাজারকে ঠিকমতো কাজ করতে দিতে হবে। মোবাইল ব্যাংকিংখাতে বাংলাদেশের সাফল্য অনেক। সেজন্য কেন মোবাইলে কর দেওয়া যাবে না? এটি সহজ করতে হবে। তিন কোটি থেকে চার কোটি টাকা না করলেও চলত। পৃথিবী আবার শীতলযুদ্ধের মধ্যে ঢুকে গেছে। বর্তমান অবস্থায় ভারত, তুর্কি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন দরকার। প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিকে উন্নয়ন করতে হবে। রপ্তানি ও কৃষির উন্নয়নে প্রযুক্তি দরকার। আর সেজন্য স্কিল ম্যানপাওয়ার প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল ক্লাসরুম না হলে ডিজিটাল জাতি কীভাবে তৈরি হবে। দেশের কন্সালটেন্টদের কাজে লাগাতে হবে। বিদেশিদের চেয়ে দেশীয়রা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে। এজন্য প্রকল্পগুলোতে দেশীয় লোকদের নিয়োগ দিতে হবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘লুঙ্গি ও ছেড়া গেঞ্জিপরা কৃষক ও শ্রমিকরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। অথচ এ অঞ্চল ছিল সমৃদ্ধ। কিন্তু শোষিত হতে হতে সেই ছেড়া গেঞ্জিতে গিয়ে দাঁড়াতে হয়েছে। সেই শোষিত লোকগুলোই স্বাধীন দেশ নির্মাণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গরীবকে ঋণ দিয়ে সেখান থেকে সুদ নিয়ে পুঁজিবাদকে অর্থযোগায় সেজন্যই ড. ইউনুসকে যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দ। তারা ৭১ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল এখনো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিরুদ্ধে।’
অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ক্ষুদ্রশিল্প ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটিতে জোর দিতে হবে।’