প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩ ২০:২০ পিএম
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৩ ২০:৫৮ পিএম
নিহত মাহমুদা হক বৃষ্টির স্বামী আসামি এস এম সেলিম। প্রবা ফটো
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় স্বামী এস এম সেলিমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক আরফাতুল রাকিব শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক মো. নূর আলম মাসুম সিদ্দিক আসামিকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মা-মেয়ের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সন্ধ্যায় বাড্ডায় কবরস্থানে মা-মেয়েকে দাফন করা হয়েছে।
পরিকল্পিত খুন করার অপরাধে বুধবার রাতে নিহত মাহমুদা হক বৃষ্টির বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় আসামি এসএম সেলিমের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, 'সারিম নামের আমার মেয়ের নয় মাসের ছেলে সন্তান রয়েছে। তার ভবিষ্যত নিয়ে এখন চিন্তা। আমাদের শরীর ভালো থাকে না। বয়স হয়েছে। আমার স্ত্রীরও শরীরও ভালো না। আর আমাদের আর্থিক অবস্থাও তেমন নাই। তাকে কে দেখাশুনা করবে। এখন এ বিষয় নিয়ে চিন্তায় আছি। ভাবছি আইনের মাধ্যমে ছেলেকে তার বাবার হাতে তুলে দেব।'
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টায় মেরুল বাড্ডার অর্কিড জামশেদ টাওয়ার বাসার সাততলার একটি ফ্ল্যাট থেকে মা মাহমুদা হক বৃষ্টি ও নয় বছরের মেয়ে সানজা মারওয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ হত্যার দায়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় বৃষ্টির স্বামী সেলিমকে। পরে থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে সেলিম।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে সেলিম খুনের দায় স্বীকার করেছেন। পারিবারিক অশান্তির জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিকল্পিতভাবে দুধের সাথে ৩০টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে স্ত্রী ও মেয়েকে খাওয়ান সেলিম। এতে দুজনের মৃত্যু হয়।
বৃষ্টির মামা সোহের শিকদার বলেন, প্রায় ১৪ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তার স্বামী সেলিমের চরিত্র ভালো ছিলো না। ভাগ্নির সাথে বিয়ের পরও সে প্রতারণা করে আরো তিন থেকে চারটা বিয়ে করেছে। পরে এগুলো জানাজানি হইলে আমরা নিজেই গিয়ে সমঝোতা করেছি। এসব নিয়ে আমার ভাগ্নির সাথে প্রায় ঝগড়া হতো। গত তিন দিন থেকে সেলিম বাসায় ছিল না। গত মঙ্গলবার বাসা আসলে তাদের সাথে ঝগড়া হয়। ওই দিন রাত আড়াইটার দিকে ভাগ্নির স্বামীর ফোন পেয়ে আমরা তার বাসায় যাই। সেখানে দেখি ভাগ্নি বৃষ্টি ও তার মেয়ে সানজা আলাদা দুই রুমে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে বনশ্রী ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে মা-মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।