প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩ ০২:০২ এএম
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাজেটে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) অন্তত ৩.২ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সোমবার (৫ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড (সিএসআরএল), ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ (ইক্যুইটিবিডি), এ্যান অর্গানাইজেশন ফর সোসিও-ইকোনমিক ডেভেলমেন্ট (এওসেড), ক্লাইমেট এ্যাকশন নেটওয়ার্ক অন সাউথ এশিয়া, বাংলাদেশ (কানসা বিডি) এবং লিডারস যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজনের করে।
ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
অর্থ পাচার রোধে এবং একটি কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে, দেশের কর ও আর্থিক ব্যবস্থারও সংস্কারের সুপারিশ করেন বক্তারা। এ উদ্যোগ নিজস্ব উৎস থেকে জলবায়ু অর্থায়নে সহায়ক হতে পারে বলেও মত দেন তারা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইক্যুইটিবিডি’র সৈয়দ আমিনুল হক। তিনি বলেন, সরকার স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বাজেটের একটি বিশেষ অংশ বরাদ্দ করে আসছে। মূলত দাতাদের দেখানোর জন্য দুর্যোগের জন্য বরাদ্দকৃত সেই অর্থ এখন জলবায়ু অর্থায়ন হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এই বরাদ্দ দেশের বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বাস্তবতার সঙ্গে, বিশেষ করে বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু সহনশীল করে তোলার লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তিনি বলেন, ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০৩০ এবং ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড প্ল্যান ইত্যাদি সরকারি কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনাহসূহ বাস্তবায়নে প্রতি বছর জিডিপি’র প্রায় ৩.২ শতাংশ (বছরে ১৮৩০০০ কোটি টাকা) অর্থ প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে বিনিয়োগ বা বরাদ্দ সেই চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
সিএসআরএল’র মো. জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, ডেল্টা পরিকল্পনা এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন সরকারি পরিকল্পনায় নীতিগত সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ বাজেট এই অসঙ্গতির ফলাফল, যেখানে বাস্তবসম্মত জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য নেই। সরকারকে কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনার বিষয়গুলোতে জোর দিতে হবে, এবং সেই অনুযায়ী জলবায়ু অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
সিপিআরডি’র মো. শামসুদ্দোহা বলেন, সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর অর্থ ব্যবহারের সক্ষমতার অভাব এবং তাদের খাতভিত্তিক কোনো পরিকল্পনা নেই, একারণেই আলাদা জলবায়ু অর্থায়নের প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়গুলো বরং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থ নিতে আগ্রহী, কারণ সেখানে তুলনামূলক জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা খুব কম।
এওসেড-এর শামীম আরেফিন বলেন, সরকার উপকূল সুরক্ষার বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করেছে। এ কারণেই জলবায়ু তাড়িত বাস্ত্যুচ্যুতি ও স্থানান্তর ঘটছে এবং বাড়ছে আর্থ-সামাজিক ভারসাম্যহীনতা।
তিনি আশা করেন সরকার সমস্যাগুলোকে গুরুত্বসহ বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়নের কৌশলগুলো সংশোধন করবে।
ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সমন্বিত এই পরিকল্পনার আওতায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, সামাজিক উন্নয়ন, কারিগরি শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির কর্মসূচি বাস্তায়িত হতে পারে। এটি করা সম্ভব হলে উপকূলীয় জনগণের জন্য একটি প্রকৃত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।