প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৩ ১৯:১৭ পিএম
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৩ ১৯:৫০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
এ বছরের বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা ৮৫০ টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে। এই টাকা দিয়ে ‘চড়া দ্রব্যমূল্যের’ বাজারে জীবন চালানো কঠিন বলে জানিয়েছে প্রতিবন্ধরী।
রবিবার (৪ জুন) অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে প্রেস ক্লাবে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান’ শীর্ষক বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মহুয়া পাল। বক্তব্য রাখেন- অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা, ডাব্লিউডিডিএফের নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি, ডিজঅ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাসরিন জাহান, এসডব্লিউআইডিয়ের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল মনির প্রমুখ।
আশরাফুন নাহার মিষ্টি বলেন, ‘আমরা যারা প্রতিবন্ধী স্বাভাবিকভাবে চলতে পারি না, তাদের খরচটাও বেশি। আপনি বাসে উঠে চলে আসতে পারেন, আমি পারি না। সেখানে আমাদের জন্য ভাতা বাড়ানো হয়নি। সরকার ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ালেও ভাতা বাড়ায়নি।’
প্রতিক্রিয়া সভায় আশরাফুন নাহার সরকারের কাছে ১১টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জীবনযাত্রার ব্যয় সূচকের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা, অতি গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য কেয়ারগিভারের জন্য ভাতা কার্যক্রম চালু করা, কোভিড ১৯ পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রকল্প নেওয়া, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ এবং প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ, সরকারি চাকরিতে কোটা বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।
যোগাযোগ ও যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে তিনি দাবি করেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলন ও যোগাযোগ সহজ করতে প্রতিবন্ধিতার ধরন ও চাহিদা মোতাবেক মানসম্পন্ন সহায়ক উপকরণ যেমন- হুইলচেয়ার, ট্রাই-সাইকেল বিশেষায়িত স্কুটার, ওয়াকার, সাদাছড়ি (ম্যানুয়াল ও ডিজিটাল), ক্র্যাচ, হিয়ারিং এইড, বহনযোগ্য র্যাম্প, ম্যাগনিফায়িং গ্লাস, মাপ্রসথেটিক-অর্থোটিক (কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অঙ্গসহায়ক উপকরণ), স্পিচ টু টেক্সট, টেক্সট টু স্পিচ, এক্সেসিবল মোবাইল অ্যাপ ব্রেইল প্রিন্টার, কী-বোর্ড, হেড পয়েন্টার, জয়ন্টিক, লার্জ প্রিন্ট ম্যাটেরিয়াল, স্কীন রিডিং সফটওয়ার ইত্যাদি) আমদানির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া।
আলবার্ট মোল্লা জানান, ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের সুপারিশকৃত মাসিক ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উল্লেখিত ২০২০ সালের জীবনযাত্রার ব্যয় সূচকের ভিত্তিতে নির্ধারিত মাসিক ভাতাসহ ৩ হাজার টাকা। বর্তমানে মাসিক ভাতা মাত্র ৮৫০ টাকা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।’
মহুয়া পাল বলেন, ‘প্রতিবন্ধিতা খাতে মোট বরাদ্দ ৩ হাজার ৭১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা যা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাত্র ২.৯৪ শতাংশ ও মোট বাজেটের ০.৪৯ শতাংশ।স্মার্ট সোসাইটির নির্মাণে ১১৫টি খাতের মধ্যে ১০টিতে প্রতিবন্ধিতা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে; যার আটটি সমাজকল্যাণ, একটি শিক্ষামন্ত্রণালয় ও একটি যৌথভাবে মহিলা ও শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত। যদি প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে এ খাতে বরাদ্দ থাকে তবে সেটা ফলপ্রসূ হবে।’
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে সহযোগী সংগঠন ছিল- ডিজঅ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ, জাতীয় তৃণমূল প্রতিবন্ধী সংস্থা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল অ্যাপেয়ার্স কানাডা, সীতাকুণ্ড ফেডারেশন, এসডিএসএল, টার্নিং পয়েন্টে ফাউন্ডেশন, মামা ক্যাশ ও উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবল্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন।