বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩ ১১:৪৪ এএম
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৩ ১২:৩৭ পিএম
সরকারি কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াসিম রানা।
রাজধানীর পুরান ঢাকার সরকারি কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াসিম রানার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২ জুন) রাতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওয়াসিম রানা কবি নজরুল কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন। তিনি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বাসিন্দা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ওয়াসিম রানাকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমরা জানতে পেরেছি, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তাৎক্ষণিক তা জানা যায়নি। মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি বংশাল থানাকে জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু বলেন, ‘ওয়াসিম রানা সব সময় হতাশাগ্রস্ত থাকত। তবে এর কারণ কখনও জানতে পারিনি। অনেকবার তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। এক বছর আগে তার বাবা মারা যায়। তার আরেক ভাই ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। গত নভেম্বরে সে ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছে। তিন বছর কষ্ট করার পর সে এই পদ পেয়েছিল। অথচ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করল। ও আমার অনেক কাছের বন্ধু ছিল। বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈবাহিক দাম্পত্যের কলহের জেরে স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেন তিনি। তবে তাৎক্ষণিক এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তার স্ত্রী সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেক দিন হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সেটা সবাইকে জানানো হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবোর একটি বাসায় থাকতেন। সামান্য মতবিরোধে রানা ভাই এত বড় কাজ করে বসলেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানজিদা আক্তার বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছে সাত বছর। এতদিন রাজনৈতিক কারণে জানানো হয়নি। এক সপ্তাহ আগে ছোট একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে রানা আমার গায়ে হাত তোলে। আমার বাবা-মা তখন ওর কাছে যেতে নিষেধ করে। শুক্রবার রাতে ও আমাকে তার বাসায় যেতে বলে। না গেলে আত্মহত্যা করার হুমকি দেয়। ও এমনটা করবে আমি ভাবতেই পারিনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা জানতাম সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি না তা সঠিক জানি না। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানাই।’
বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘নাজিমুদ্দিন রোডে শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের পেছনে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন রানা। সেখানে গলায় ফাঁস নিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। ঠিক কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। আমরা তদন্ত করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।’