প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩ ১৫:৫৬ পিএম
আপডেট : ৩১ মে ২০২৩ ১৮:৪৭ পিএম
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। ছবি : সংগৃহীত
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, ‘আগে কোনো মামলা তদন্ত করতে হলে সোর্সের ওপর নির্ভর করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, তদন্তসংক্রান্ত আধুনিক প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জামাদির সংযোজন ও জনবল বৃদ্ধিসহ সব কিছু মিলে তদন্তে আমরা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছি, পুলিশ এখন ৯৫ শতাংশ আনডিটেক্টেড মামলার তদন্ত সম্পন্ন করছে।’
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আইজিপি বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন ক্র্যাবের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পরস্পর আমরা অনেক কাজও করি। নির্বাচনী ডিউটিতে পাশাপাশি কাজ করে থাকি। দায়িত্বের চেয়ে তাই পারস্পরিক প্রত্যাশাটাও আমাদের বেশি।’
আইজিপি আরও বলেন, ‘বর্তমানে পুলিশের সোর্স অব ইনফরমেশন হলো সাংবাদিক, আর সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে পুলিশ। তাই পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে যোগাযোগটা বেশি দরকার। যোগাযোগ বেশি হলে পেশাগত দায়িত্ব পালন সহজ হয়। একটা মামলা হলে যত কিছুই বলি না কেন, সেটা পুলিশকে তদন্ত করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বলি সাংবাদিকরা এই নিউজ, ওই নিউজ না করলেও পারত। আমি মনে করি, সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়া উচিত না। কারণ তাদেরও তো এক্সসেপশনাল নিউজ প্রকাশ বা দেখাতে হয়। সাংবাদিক ও পুলিশের উদ্দেশ্যই হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম দূর করা। সেজন্য আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বেশি দরকার।’
ক্র্যাব নেতাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতার প্রত্যাশা রেখে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘অনেক জায়গায় অনেক গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব থাকে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে তা পছন্দ করি না। ঢাকার বাইরে কাজের সময় কখনও আমার সঙ্গে প্রেসের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়নি। সাংবাদিক বন্ধুদের সার্বিক সহযোগিতা ও আস্থা আমি অর্জন করেছি। সাংবাদিকদের কারণেই আজকে পুলিশের ভালো দিকগুলো প্রকাশ পাচ্ছে, বাড়ছে পুলিশপ্রীতি। সম্প্রীতির যে বন্ধন সেটা জনগণের সঙ্গে আরও সুদৃঢ় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে সাংবাদিকরা রিপোর্টিং করে থাকেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও বাংলার সাংবাদিকরা কলম দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। আমাদের সেই পূর্বসূরিদের পথ ধরেই বর্তমান সাংবাদিকরা এগিয়ে যাচ্ছেন। আগামী দিনেও উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে। আমরা দক্ষ জনবল গড়ে তুলছি। প্রযুক্তিগত সহায়তার কারণে পুলিশের তদন্তে এসেছে আমূল পরিবর্তন। আগে কোথাও একটা ফ্যাক্সের দোকান খোলা পাওয়া যায় কি না, খুঁজে বেরিয়েছেন সাংবাদিকরা। এখন কিন্ত সব হাতের মুঠোয়।‘
আইজিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, সেদিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আর্থসামাজিক উন্নতি ঘটেছে। এর সুফল আমরা সবাই ভোগ করছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। দুর্বার গতিতে এই দেশ এগিয়ে চলেছে।’
সেই উন্নয়নের সারথি হয়ে পুলিশ সাংবাদিকসহ সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসান, মো. মাজহারুল ইসলাম, জামিল আহমেদ, মো. আতিকুল ইসলাম, আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক, ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবির, এআইজি মনজুর হোসেন ও উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা একেএম কামরুল আহছান প্রমুখ।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, সহসভাপতি মাসুম মিজান, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এসএম ফয়েজ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, কল্যাণ সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন, জসীম উদ্দীন ও এনামুল কবীর রুপম।