মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার যুবক আমির হোসেন। বয়স ২৫ বছর। একসময় ‘কষ্টের জীবন’ নামে একটি ফেসবুক আইডিতে যুক্ত হন তিনি। শুরু হয় মেসেঞ্জারে এসএমএস আদান-প্রদান। গড়ে ওঠে সখ্য। একপর্যায়ে ওই আইডি থেকে আমিরকে সমকামিতার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাকে সাক্ষাৎ করতে ডাকা হয় গাজীপুরে। সেই অনুযায়ী আমির গত বছর ১৭ ডিসেম্বর গাজীপুর যান। চক্রের সদস্যরা তাকে জিম্মি করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দেওয়ায় আমিরকে হত্যা করে মরদেহ ফেলা হয় সেপটিক ট্যাংকে।

ফেসবুকে সমকামিতার ফাঁদ পাতা এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন খবর দিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ’২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর এলাকা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে ঢাকা আসেন আমির। দক্ষিণখানের আশকোনা মেডিকেল রোডে বড় বোন নুরনাহার বেগমের বাসায় ওঠেন আমির। তারপর গাজীপুর গিয়ে জিম্মি হন তিনি। তার কয়েক দিন পর আমিরের ছোট বোন কামরুন্নাহারকে ফোন করে তার মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। সে ঘটনায় আমিরের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন দক্ষিণখান থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে অপহরণ মামলা করেন।’

উপকমিশনার মোর্শেদ বলেন, ’আমিরের খোঁজে নেমে তারা তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্য আশরাফুল ইসলামকে সাভারের জিরাবো এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাসেল সরদার ও তৌহিদুল ইসলাম বাবু নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার নোয়াখালীর দুর্গম হাতিয়া দ্বীপে অভিযান চালিয়ে চক্রের হোতা তারেক আহাম্মেদ ও তার সহযোগী মোহাম্মদ হৃদয় আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার একটি বাড়ির পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে আমিরের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পলিথিনে মোড়ানো বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।’

তারেক আহাম্মেদকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে উপকমিশনার বলেন, ’’তারেক আহাম্মেদের ‘কষ্টের জীবন’ নামে একটি ফেক ফেসবুক আইডি ছিল। সেখানে যুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করতেন এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে সমকামিতার প্রস্তাব দিতেন। প্রস্তাবে রাজি হওয়া তরুণদের গাজীপুরের চৌরাস্তা, শ্রীপুর ও মাওনাসহ বিভিন্ন এলাকায় সাক্ষাতের জন্য ডাকা হতো।’