প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩ ২০:০১ পিএম
‘আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে আলোকরা। প্রবা ফটো
শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের মধ্যকার বৈষম্য দূর করে সবার শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত করতে হবে বলেছেন শিশুদের সংগঠন খেলাঘরের চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ মাহফুজা খানম। শুক্রবার (১২ মে) খেলাঘর আয়োজিত ‘শিশুর বাসযোগ্য নিরাপদ বাংলাদেশ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
খেলাঘরের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুনু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদের, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সহ সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন চাঁদের হাটের সাধারণ সম্পাদক শামিম পারভেজ, খেলাঘরের সদস্য ডা. লেলিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিশু সংগঠক ও সাবেক জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা ও খেলাঘর বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি পঙ্কজ রায় চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে শিশুদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ দিতে দশটি সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হলো-সব শিশুর জন্য অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত করা, পিতা, মাতা ও পরিবারের পরিচর্যা ও ভালোবাসায় বেড়ে ওঠা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ সব প্রকার শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা থেকে নিরাপদ রাখা, মেধা বিকাশের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পরিবেশের সুযোগ নিশ্চিত করা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট নানা সংকট মোকাবিলায়, দুর্যোগকালীন অবস্থায় ত্রাণলাভের ক্ষেত্রে শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়া, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের জন্য লাইব্রেরি ব্যবহার, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলার মাঠ ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানাগারকে আধুনিকীকরণসহ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়া, শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করা।
মাহফুজ খানম আরও বলেন, শিশুদের এক অংশ বড় হয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে আরেক অংশ জানে না স্বাধীনতা কী? তারা কিভাবে বড় হচ্ছে? চোখের সামনে কী দেখছে? সেটাও বড় বিষয়। মানবিক মূল্যবোধের জায়গা নেই, ধর্মান্ধ হয়ে বড় হচ্ছে।
১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৫ কোটি শিশু। তাদের নিয়ে সরকার কী ভাবছে? বাজেটে কত শতাংশ শিশুর জন্য বরাদ্দ থাকে।
শেরিফা কাদের বলেন, বাসায় শিশুকে দেখাশুনার জন্য খেলার সাথী আরেকটা শিশুকে নিয়ে আসি। তাকে দিয়ে আরও অনেক কাজ করাই। তার সঙ্গে আমরা খারাপ ব্যবহার করি। গ্যারেজে বাবা মা কাজ শেখাতে পাঠায় শিশুদের, তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। বাচ্চাদের সেল্ফ রেসপেক্ট করা শেখানো উচিত। এই বৈষম্য নিরসন করতে হবে।
রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, মেধার নামে অর্থনৈতিক বৈষম্য করা হচ্ছে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে যেতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমতে থাকে। বিভাজন বাড়তে থাকে। তাহলে শিশুদের ভবিষ্যৎ কী? দুধ, ডিম খাওয়ানোর টাকা নেই শিশুকে। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে তাহলে আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি? শিশুদের গড়ে তুলার পেছনে অভিভাবক থেকে রাজনীতিবিদÑ সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।