প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ০০:০৪ এএম
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩ ১১:২০ এএম
কবি ও চট্টগ্রাম বন্দর কলেজের অধ্যাপক সেলিনা শেলীকে চাকুরিচ্যুতি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বুধবার রাজধানীর শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। প্রবা ফটো
কবি ও চট্টগ্রাম বন্দর কলেজের অধ্যাপক সেলিনা শেলীকে চাকুরিচ্যুতি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশে কবি, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় তারা সেলিনা শেলী মৌলবাদের ষড়যন্ত্র, রোষানল ও হয়রানির শিকার উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘কোনো রকম তদন্ত না করে সেলিনা শেলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এটা অন্যায়। এই অন্যায় যারা করেছে, সেই বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কলেজ পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’
নাট্যকার রতন সিদ্দিকী বলেন, সেলিনা শেলী চট্টগ্রাম বন্দরে স্কুল, কলেজে পড়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রগতিশীল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এজন্য তিনি শিবিরের হামলার শিকারও হয়েছেন। সেলিনা শেলী যখন কলেজে শিক্ষকতার চাকরি নিলেন, তখন থেকেই জামায়াত-শিবিরের টার্গেটে ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেলী কলেজের উপাধ্যক্ষ হলেন এবং কিছুদিন আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলেন। জামায়াত-শিবির একটা ইস্যু খুঁজছিল তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার। ফেসবুকে লেখা একটা পোস্টকে ইস্যু বানিয়ে তারা এখন সেলিনা শেলীকে চাকরিচ্যুত করেছে।
কবি আফরোজা সোমা বলেন, একজন কবি তিনি শব্দ নিয়েই তো কাজ করেন। তিনি ফেসবুকে রমজান কেন ‘রামাদান’ হলো। সেটা নিয়ে একটু স্যাটায়ার করেছেন। তার জন্য চাকরিচ্যুত করাটা ভীষণ অন্যায়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে এখন সামান্য বিষয়কেও যেভাবে দমন করা হচ্ছে, সেটা ভীতিকর। কণ্ঠরোধ করার এই আইন বাতিল করতে হবে।
সমাবেশের অন্যতম সংগঠক রবীন আহসান বলেন, ‘মৌলবাদীদের ষড়যন্ত্র ও রোষানলের শিকার সেলিনা শেলীকে হয়রানির প্রতিবাদে আমরা এই সমাবেশ করছি। একজন কবিকে ফেইসবুকে কয়েকটি শব্দ লেখার জন্য চাকরিচ্যুত করা হয়েছে; এই ঘটনা ন্যক্কারজনক।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে ৬০টিরও বেশি সমাবেশ করার কথা জানিয়ে শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রবীন বলেন, ‘এই আইনের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করে যাচ্ছি।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শরিফুজ্জামান, কবি আলফ্রেড খোকন, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক নৃ, মুশফিকা লাইজু, নাট্যনির্দেশক অলোক বসু, কবি শাহেদ কায়েস, সাকিরা পারভীন, কথাসাহিত্যিক মোজাফফর হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেত্রী সুমাইয়া সেতুসহ অনেকে।