× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ড

‘খালি নাম পরিচয় লেইখ্যা নেয়, কিছুই দেয় না’

সৈয়দ ঋয়াদ

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৫০ পিএম

আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ২২:১৪ পিএম

‘খালি নাম পরিচয় লেইখ্যা নেয়, কিছুই দেয় না’

‘মার্কেট তো আগুনে পুড়ে সব শেষ হইয়া গেছে, এখন খোলা মাডে আমগো শইলডা (আমাদের শরীর) পুইড়া শেষ হইতাছে, নীচে বালুর গরম ওপরে রইদ (রোদ), তার মধ্যে নাই কোনো বেচাকেনা। বেশি কাস্টমারও আসে না। আল্লাহ জানে কপালে কি আছে!’ এভাবেই অসহায়ত্ব প্রকাশ করছিলেন বঙ্গবাজারে পুড়ে যাওয়া কাপড়ের দোকান মায়ের দোয়া গার্মেন্টসের কর্মচারী মো. ইব্রাহিম।

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে ইব্রাহিম জানান, এইখানে দোকানদারি এক প্রকার হয়রানি। কোনো বেচাকেনা নেই। সকাল আটটায় দোকান খুলেছেন অথচ বিকাল চারটা পর্যন্ত মাত্র পাচঁশ টাকা বিক্রি করেছেন। সেটাও বলতে গেলে কেনা দামে। যে জামা পাইকারিতে তারা পাঁচশ করে কিনে আনেন, সেই জামা খুচরা কাস্টমার তিনশ টাকা বলে চলে যায়। মালিক কী নেবেন আর তাকে কী দেবেন বলে আক্ষেপ করেন তিনি।

৪ এপ্রিলের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ পাইকারি ও খুচরা কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজারের অন্তত ৫ হাজার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পথে বসেছেন অনেক ব্যবসায়ী। চাকরি হারিয়েছেন দোকানগুলোর ২০ থেকে ২৫ হাজার কর্মচারী। এই অবস্থায় পুড়ে যাওয়া মার্কেটের খোলা মাঠেই ১২ এপ্রিল থেকে কাপড় নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ। তবে খালি মাঠে রোদের মধ্যে বড় ব্যবসায়ীদের অনেকেই বসেননি।

করোনার আগেই বঙ্গবাজারে বাবা মায়ের দোয়া নামে নতুন দোকান নিয়েছিলেন মোহসিন। করোনার ধাক্কায় একবার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন, সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই এবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাকে নিঃস্ব হতে হয়েছে। গত দশ বারো বছরের জমানো টাকার সব শেষ হয়ে গেছে এই ক্ষুদে উদ্যোক্তার। তারপরও নতুন করে বেঁচে থাকার তাগিদে আবারও দোকান নিয়ে বসেছেন তিনি।

প্রতিদিনের বাংলাদেশেকে মোহসিন বলেন, ‘সবাই খালি আশ্বাস দেয়, নাম পরিচয় লেইখ্যা নিয়া যায়, কেউ কিছু দেয় না। টিভিতে দেখি অমুক এটা পাইছে, তমুক ওটা পাইছে কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত ১০ কেজি চালের একটি বস্তা ছাড়া কিছুই পাই নাই। শুনতেছি ফান্ডে কোটি কোটি টাকা জমা পড়ছে, আমরা এসব টাকা কি পাবো? সব তো বড় মানুষের পেটে চলে যাবে।’

একই অবস্থা কাজী ফ্যাশনের। খোলা মাঠে তারা কাপড় নিয়ে বসেছেন। দোকানি নোমান বলেন, ‘সকাল ৮টায় খুলছি, বিসমিল্লাহ করছি, এরপর এই বেলায় এক টাকাও বেচতে পারি নাই। এমনে তো ব্যবসা করা যায় না। মানুষ এইখানে কাপড় নিতে আসে না। যারা আসে তারা অনেকেই মনে করে মার্কেট পুড়ে গেছে কাপড় সস্তা, আবার কেউ পুড়ে গেছে বলে দয়া দেখায়। তবে বেচাকেনা নাই।’

পুড়ে যাওয়া কাপড়ের দোকান মা বাবার দোয়ার দোকানি রাসেল জহির বলেন, ‘ভাই অনেক টাকার কাপড় ছিল সব পুড়ে গেছে, কত টাকার কাপড় পুড়ছে সেইডা বলে লাভ নাই। কারণ এত টাকা কেউ দিব না। বইসা থাইকা কি করুম, তাই এক ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু প্যান্ট আইনা বসছি, ভাবছি যা বেচতে পারি, হাত খরচটা যদি ওঠে, তা-ও তো চলতে পারব। কিন্তু বেচা-বিক্রি নাই।’

তবে ব্যবসায়ীদের অনেকেরই অভিযোগ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র খোলা মাঠে ত্রিপল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রতি রক্ষা করেননি। এ বিষয়ে জানতে দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ব্যক্তিগত ফোনে বেশ কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএম করা হলেও উত্তর আসেনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা