প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩ ২০:০০ পিএম
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩ ২০:২৩ পিএম
গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে নূরে আলম সিদ্দিকীকে গার্ড অব অনার দেয়। প্রবা ফটো
গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ আসর স্বাধীন বাংলা ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৯ মার্চ) বিকালে জানাজা শেষে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান ও মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজায় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলসহ (জেএসডি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী। তার প্রেস সচিব কবি ও বাচিক শিল্পী অনিকেত রাজেশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ’বুধবার ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নূরে আলম সিদ্দিকী মারা গেছেন। সাভারে নিজের তৈরি মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হবে।’
পরিবার জানায়, নূরে আলম সিদ্দিকী সাভারে নবী টেক্সটাইলের পাশে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেই মসজিদের পাশে তার জন্য কবরের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৪৪ সালের ২৬ মে ঝিনাইদহ সদরের চাকলাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭০-৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১ মার্চ থেকে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২ মার্চ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বটতলায় ডাকসু ও ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ছাত্র-জনতার এক বিশাল সমাবেশ।
সমাবেশে শিল্পী শিবনারায়ণ দাশের পরিকল্পনা ও অঙ্কনে সবুজ পটভূমিকার ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে বাংলার সোনালি মানচিত্র-সংবলিত স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ডাকসুর তৎকালীন সহসভাপতি আ স ম আব্দুর রব। সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসু সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখন ও ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।
একাত্তরের ১০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রাবাসের প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি জনসভা হয়। এ সভার সভাপতিত্ব করেন নূরে আলম সিদ্দিকী। মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীরও অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি।
১৯৭৩ সালে যশোর-২ আসন থেকে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে সপ্তম ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।