প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩ ১৫:২৬ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৩ ১৬:১২ পিএম
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। প্রবা ফটো
সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রেস্তোরাঁ খাত করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বিরিয়ানির ব্যবসায় ঝুঁকছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের বেকারি ব্যবসা তাদের নিয়ন্ত্রণে। এখন তারা রেস্তোরাঁ খাত কব্জায় নিতে রেস্তোরাঁ মালিকদের বিরুদ্ধে জোট বেঁধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ খাত নিয়ে নেতিবাচক প্রচার বন্ধে আইসিটি আইনে মামলার বিধান চালুর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। ‘দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি, রমজানে রেস্তোরাঁয় ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি, বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারণা এবং সরকারি সংস্থার অভিযানের নামে হয়রানি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।
সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ‘দেশের বড় বড় পাঁচটি কোম্পানি বেকারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। তারা বিরিয়ানির ব্যবসাও নিয়ে আসছে। আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে এ ব্যবসা নিজেদের দখলে নিতে নেতিবাচক প্রচার চালাচ্ছে তারা।’
তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে রেস্তোরাঁ ব্যবসা ৮ গুণ বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ৪ লাখ ৮১ হাজার রেস্তোরাঁ আছে। আগামী ১০ বছর পর এটি ৩০ গুণ বাড়বে বলে আমাদের প্রত্যাশা। এ অবস্থায় ভালো গাইড লাইন দরকার।’
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চয়তায় সবচেয়ে বড় বাধা সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা উল্লেখ করে সমতির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে ১২টি অধিদপ্তর মনিটরিং করে। আমরা এটি একটি সংস্থার অধীনে নিয়ে আসতে দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছি। হোটেল-রেস্তোরাঁর ৯৫ শতাংশ কর্মীই অদক্ষ ও স্বল্প শিক্ষিত। তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।’
তার অভিযোগ, ‘আমাদের স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। এখন দুই সিটি করপোরেশন রেস্তোরাঁ মনিটরিং করতে উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, আইসিডিডিআরবিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রধান স্টেকহোল্ডার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।’
৯টি দাবি উল্লেখ করে সমিতির মহাসচিব জানান, বর্তমানে রেস্তোরাঁয় ৫ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যাক্স দিতে হয়। আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিম্ন-মাঝারি মানের রেস্তোরাঁ ও স্ট্রিট ফুডের ভ্যাট ৩ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান তিনি। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কর নির্ধারণের প্রস্তাব রাখেন তিনি।
রেস্তোরাঁয় শতভাগ গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হয় না অভিযোগ তুলে ইমরান বলেন, ‘৪০ শতাংশ গ্যাস দিয়ে ১০০ শতাংশের বিল নেওয়া হয়।’
লিখিত বক্তব্যে উত্থাপিত তার দাবিগুলো হলো, রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; মোবাইল কোর্ট পরিচালনা যৌক্তিক হতে হবে; জামিন অযোগ্য আইনের ধারা বাতিল করতে হবে; করোনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ৩০ শতাংশ রেস্তোরাঁকে সরকারি সহযোগিতা দিতে হবে; বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; নেতিবাচক প্রচারণায় রেস্তোরাঁ খাতে সংকট তৈরি হয়েছে, এ সংকট কাটাতে প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও এ-সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি হাজী মো. ওসমান গনির সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি এমএস আলম শাহজাহানম, রেজাউল করিম সরকার রবিন, প্রথম যুগ্ম মহাসচিব মো. ফিরোজ আলম সুমন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী, বিপু, কোষাধ্যক্ষ তৌফিকুল ইসলাম প্রমুখ।