প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৭:৩৯ পিএম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৮:০২ পিএম
শুক্রবার কেরানীগঞ্জের তারাগঞ্জের একটি রিসোর্টে আয়োজিত মিলনমেলায় ঢাকায় থাকা রামুবাসীরা। প্রবা ফটো
নানা আয়োজনে ঢাকায় থাকা
রামুবাসীদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১০ মার্চ) রাজধানীর কেরানীগঞ্জের তারাগঞ্জের
নিউ ভিশন ইকো রিসোর্টে এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সারা দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে
রামু-কক্সবাজারের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। গুণিজন সম্মাননা, ঐতিহ্যবাহী মেজবানি
ভোজ, আলোচনা, প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, র্যাফেল ড্র
ও শিশুতোষ নানাবিধ আয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্যভাবে রামু উৎসব-২০২৩ নামের এই মিলনমেলা
উদযাপিত হয়।
সারা দিনব্যাপী এই আয়োজনে
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন,
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, সদ্য সাবেক সিনিয়র সচিব ও কক্সবাজার
সমিতির সভাপতি হেলালুদ্দীন আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর
শিরীণ আখতার, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল
(অব.) ফোরকান আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য সহিদুজ্জামান, সাবেক সচিব আমম নাসির উদ্দিন,
ব্যারিস্টার মিজান সাইদ, ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়াসহ অনেকে। তাদের প্রত্যেকের
বক্তব্যে রামুর ইতিহাস সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সম্ভাবনা অঙ্কিত হয়েছে।
ঢাকার রামু সমিতির সভাপতি
মাফরুহা সুলতানার সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই আয়োজনে বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আয়োজনের আহ্বায়ক মোমিনুর রশিদ আমিনের সূচনা বক্তব্যের পর ধন্যবাদ
বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদদ সাইমুল আলম চৌধুরী। এরপর রামু সমিতির সদস্য যারা
ইতোমধ্যে মারা গেছেন, তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব আনা হয়।
রামু তথা কক্সবাজারবাসীর
সার্বিক কল্যাণ ও দেশের অগ্রযাত্রায় প্রণিধানযোগ্য অবদান রাখায় চারজন গুণিজনকে আজীবন
সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আজীবন সম্মাননা ‘রামু সমিতি সম্মাননা ২০২৩’ প্রদান করা হয় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা
আব্দুল মোমেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর শিরীণ আখতার, রামু
উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সমাজসেবক অ্যাডভোকেট আবুল মনসুর এবং রামু সমিতির সাবেক সভাপতি
নূর মোহাম্মদকে।
সম্মাননাপ্রাপ্তদের
পক্ষ হতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিরীণ আখতার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান, রামু
সমিতির পক্ষ হতে এই সম্মাননা তার জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি। তিনি রামুর প্রত্নতত্ত্ব
ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
এক সময়ের ‘হলুদ ফুলের রাজ্য’ রামুকে প্রাধান্য দিয়ে থিম রঙ হিসেবে বাসন্তী
হলুদকে প্রাধান্য দিয়ে ‘রামু উৎসব ২০২৩’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ সময় অতিথিদের হাতে প্রকাশনা তুলে দেন প্রকাশনা
সম্পাদক মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম ও মূল ডিজাইনার মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও ডাইরেক্টরি সমন্বয়ক
খুরশেদ আলম। এবারের প্রকাশনাতে রামুর ঐতিহ্য ও সম্ভাবনাকে অংকিত করা হয়েছে।
উৎসব আয়োজনে রামুর প্রত্নতাত্ত্বিক
ঐতিহ্যকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে রামু সমিতির পক্ষ থেকে নানাবিধ উদ্যোগ
নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের নামকরণ, ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের ২২৪
বছরের পুরোনো দাপ্তরিক কার্যালয় ও বাসভবনকে ‘জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য জাদুঘর’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
বরাবর আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের নেপথ্যে গবেষণামূলক কার্যক্রম অব্যাহত
রাখায় জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতাউর রহমানকে শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া
হয়। এ সময় তিনি জানান, এই আবেদন অনুমোদিত হলে কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনা নবদিগন্তের
সূচনা হবে। এতে হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ রামুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে ও ঐতিহ্যে
নতুন মাত্রার সূচনা হবে।
সম্প্রতি মৃত্যুবরণ
করা রামু সমিতির সাবেক আইন সম্পাদক আনোয়ারুল হাকিম আরাফাতের স্মরণে ‘স্মৃতিতে ভাস্বর আরাফাত’ স্মারক তুলে দেওয়া হয় তার সহোদর লোকমান হাকিম
আরাফাতের হাতে।
মূল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা
করেন রামু সমিতির সহসভাপতি সুজন শর্মা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহিব্বুবুল মোক্তাদীর তানিম।
এরপর সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক বিজন শর্মা ও
সহসভাপতি রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ মেজবানি ভোজ সমন্বয় করেন ক্রীড়া সম্পাদক সাজেদুল আলম মুরাদ। রামু থেকে রন্ধন দল এসে খাবার তৈরির কাজ সম্পন্ন করেন।