প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩ ১৫:১৯ পিএম
রাজধানী ব্যস্ততম এলাকা নতুন বাজার। প্রতিদিনের মতো ট্রাফিক ডিউটি পালন করছিলেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। ঠিক তখনই বাস কাউন্টারের একজন স্টাফ এসে তাকে জানান- পাশেই ফুটপাতে একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে আরেক নারী সহকর্মীকে নিয়ে ছুটে যান সেখানে। গিয়ে দেখেন, অন্তঃসত্ত্বা একজন নারী প্রসব বেদনায় ছটফট করছেন। তাৎক্ষণিক বাস কাউন্টার থেকে ছাতা এনে গড়ে তোলেন বেষ্টনী। কিছু সময় পর ফুটপাতেই স্বাভাবিকভাবে এক ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। এরপর প্রসূতি ও নবজাতককে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন নিজেই। এখন মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায়।
পুলিশের গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজুর রহমান রিয়েল তার ফেসবুকে কয়েকটি ছবি যুক্ত করে ঘটনাটি তুলে ধরেন। এরপরই তার পোস্টটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সার্জেন্ট মোর্শেদা ও তার নারী সহকর্মী কন্সটেবল তানিয়ার প্রশংসা করেন অনেকেই।
এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল তার পোস্টে লিখেছেন, প্রতিদিনের মতো ট্রাফিক ডিউটি করছিলেন সার্জেন্ট মোর্শেদা। দায়িত্বরত অবস্থায় ঢাকার চাকা পরিবহন কাউন্টারের একজন স্টাফ তাকে বলেন, পাশেই একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ কথা শোনার পর একটুও দেরি না করে তিনি দ্রুত ট্রাফিক কন্সটেবল তানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান, সেই নারীর প্রসব ব্যথা উঠছে। তিনি অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে রাস্তার পাশে মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন।
আশেপাশে কোনো ভবনও ছিল না যন্ত্রণাকাতর ওই নারীকে নেওয়ার মতো। এ অবস্থা দেখে সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কন্সটেবল তানিয়া দ্রুত বাস কাউন্টার থেকে কয়েকটি ছাতা নিয়ে আসেন। এ সময় চারপাশ ঘিরে দিয়ে এবং ওই নারীকে বাচ্চা প্রসবে সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পরে একটা ফুটফুটে বাচ্চা জন্ম নেয়। কিন্তু তখনও নবজাতকের নাড়ি কাটা হয়নি।
সার্জেন্ট মোর্শেদা জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করে দ্রুত জরুরি অ্যাম্বুলেন্স এনে নবজাতকসহ প্রসূতি মাকে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালে নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছেন।
হাফিজুর রহমান রিয়েল বলেন, ‘এরকম মহানুভবতা ও ভালো কাজের জন্য সার্জেন্ট মোর্শেদা ও কন্সটেবল তানিয়াকে ধন্যবাদ জানাই।’
এ বিষয়ে সার্জেন্ট মোর্শেদা বলেন, ‘আমি সড়কের যানজট কমানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যে এক ব্যক্তি এসে জানাল নতুন বাজারে ফুটওভার ব্রিজের নিচে একজন নারী অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। আমি দ্রুত ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে তার কাছে যাই। যাওয়ার পর তাকে আগলে ধরি। এক পথচারী নারীকে সহায়তা করতে অনুরোধ করি। অল্প সময়ের মধ্যেই সন্তান প্রসব হয়।
‘পরে আমি অ্যাম্বুলেন্স কল করে পাশের উপশম হেলথ পয়েন্টে পাঠাই। আমিও মোটরসাইকেলে অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে যাই। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন।’