প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৮ পিএম
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪৪ পিএম
ফাইল ছবি
টানা চারদিন বায়ুদূষণের শীর্ষস্থানে থেকে আজ তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। তবে আজকেও ঢাকার বায়ু খুবই অস্বাস্থ্যকর। রবিবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকার স্কোর ২০৮ নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে। ২৪৬ স্কোর নিয়ে প্রথমস্থানে পাকিস্তানের লাহোর। ২২৩ স্কোর নিয়ে চীনের বেইজিং দ্বিতীয় স্থানে আছে। ১৯৭ নিয়ে ভারতের মুম্বাই চতুর্থ ও ১৯০ স্কোরে ইরাকের বাগদাদ পঞ্চম স্থানে আছে।
শূন্য স্কোর নিয়ে নরওয়ের অসলো ভালো বায়ুর শহরের শীর্ষে অবস্থান করছে। ৪ স্কোর নিয়ে যুক্তরাস্ট্রের সল্ট লেক সিটি ও অস্ট্রেলিয়ার ক্যানভেরা এবং সিডনি দ্বিতীয় স্থানে আছে।
গতকাল ৪ মার্চও শীর্ষে ছিল, ৩ মার্চ ২২৩ স্কোর নিয়ে দূষিতবায়ুর শীর্ষে ছিল ঢাকা। ২ মার্চ স্কোর ২৯৭ নিয়ে প্রথম ও পহেলা মার্চ ১৯৯ স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণে শীর্ষস্থানে ছিল ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) বায়ুর মান সূচক হিসেবে একিউআই ৫০ এর মধ্যে থাকলে সেই বাতাসকে বলা হয় ভালো। ১০০ পর্যন্ত সহনীয়। ১০১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ উল্লেখ করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোর ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। আর ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বা বিপজ্জনক বলে বিবেচিত।
বাংলাদেশের একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও ৩)। অপরদিকে শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে বায়ুমানকে ভালো ও ৫১-১০০ স্কোরকে মডারেট হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়।
বিশ্বব্যাংকের ‘ব্রিদিং হেভি: নিউ এভিডেন্স অন এয়ার পল্যিউশন অ্যান্ড হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা অনুযায়ী ঢাকায় সারা দিনে একজন যে পরিমাণে দূষিত বায়ু গ্রহণ করে তা প্রায় দুটি সিগারেটের সমান ক্ষতি করে।
বায়ুদূষণে রোগবালাই
বায়ুদূষণে উল্লেযোগ্যভাবে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, কাশি, নিম্ন শ্বাসনালীর সংক্রমণ ও বিষন্নতার ঝুঁকি। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক ও এ রোগে আক্রান্তরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা শ্বাস রোগে আক্রান্তরা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
দূষণের উৎস
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনটি খাতকে চিহ্নিত করা হয়। ১. যানবাহনের ধোঁয়া ২. ইটভাটার চুল্লি দিয়ে নির্গত কালো ধোঁয়া ৩. শুষ্ক মৌসুমে অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামতের কারণে সৃষ্টি হওয়া ধুলা ও ইটভাটার ধোঁয়া।
বলা হয়েছে, যানজট ও নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে যে পরিমাণ বায়ুদূষণ হয়, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুমানের চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি। ইটভাটার কারণে যে দূষণ হয় তা ১৩৬ শতাংশ বেশি।
ঢাকার বাতাসে হেভি মেটাল
ঢাকায় সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হচ্ছে অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণ কাজের মাধ্যমে। বায়ূদূষণের জন্য নির্মাণখাত ৩০ শতাংশ দায়ী।
এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বায়ূ দূষণ হচ্ছে ইটভাটা ও শিল্পকারখানার মাধ্যমে। যার হার ২৯ শতাংশ। বায়ুদূষণের তৃতীয় সর্বোচ্চ কারণ হলো যানবাহনের কালো ধোঁয়া, যার শতকরা হার ১৫ শতাংশ।