প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৪১ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৫১ পিএম
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। ফাইল ফটো
মৌলবাদীদের যতই ছাড় দেওয়া হোক না কেন, তারা কোনো ছাড় দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি আয়োজিত ‘বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা পাঠ্যক্রম বিষয়ে অপপ্রচার বন্ধ হোক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘সরকার মৌলবাদীদের কথা মেনে নিয়েছে। মৌলবাদীরা এজন্য ভীষণ খুশি। তাদের সঙ্গে সংহত হয়ে সপ্তম শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক পড়া বাদ দিতে হবে, এ কেমন কথা? আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের অবস্থা সবাই জানে। মৌলবাদীদের যতই ছাড় দেওয়া হোক না কেন, তারা আপনাদের কোনো ছাড় দেবে না।’
গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘দেশের হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ কেন সামাজিকভাবে সম্মান পাবে না? তারা সমাজ থেকে আলাদা নিশ্চয়ই নয়। তাহলে পাঠ্যপুস্তকে তাদের বিষয়ে লেখা হলে মৌলবাদীরা কেন আন্দোলন করবে? বাংলাদেশ আফগানিস্তান না। মৌলবাদীদের কাছে সরকারের নতজানু হওয়ার দরকার ছিল না।’
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নির্বাহী পরিচালক মফিদুল হক বলেন, ‘আমাদের নবী বলেছিলেন, জ্ঞানার্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যাও অর্থাৎ শিক্ষার বা জ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের কোনো বিভেদ নেই।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা ঢাকা শহরের শিক্ষার্থীদের জানাব যানজটের কথা, মশার উৎপত্তির কারণ সম্পর্কে তাদের বলব। কিন্তু তাদের পাহাড়-পর্বত ধ্বংসের কথা বললে তারা কিছু বুঝবে না। অন্যদিকে পার্বত্য এলাকার বাচ্চাদের ঢাকা শহরের যানজট সম্পর্কে বললে তারা কিছু বুঝবে না। সেজন্য এলাকাভিত্তিক পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে পাঠদান করানো উচিত।’
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো শিশুদের মধ্যে নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা, তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা। শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং বিশ্বায়নের এ যুগে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে প্রস্তুত করা।’
অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুসসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। এ সময় তারা দেশের নারী আন্দোলন, সচেতন শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি বিজ্ঞানভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক কুসংস্কারমুক্ত জেন্ডার সংবেদনশীল মানসম্মত শিক্ষানীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থার দাবি জানান।