প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:১৮ পিএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:৩৮ পিএম
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির মূলহোতাসহ আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ছবি : প্রবা
সীমান্ত দিয়ে আনা অবৈধ অস্ত্র বিক্রয়কারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে আরও নতুন তথ্য। চক্রটি সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে প্রতিটি অস্ত্রের বিভিন্ন অংশ খুলে আলাদা আলাদা ব্যাগে করে রাজধানীতে প্রবেশ করতো। পরে অবৈধ লাইসেন্স তৈরি করে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে দুই থেকে তিন লাখ টাকায় অস্ত্র বিক্রি করতো।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির মূলহোতা পলাশ শেখসহ আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বাকীরা হলেন- মনোয়ার হোসেন, রশিদুল ইসলাম, নাজীম মোল্লা, মারুফ হোসেন, নাইমুল ইসলাম।
তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটার গান, ৭টি একনালা বন্দুক, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ওয়ান শুটারের গুলি দুই রাউন্ড, একনলা বন্দুকের গুলি ৬৭ রাউন্ড, ০.২২ বোর রাইফেলের গুলি ৪০ রাউন্ড, ১১টি জাল লাইসেন্স, ১৯টি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার নামের সিল ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন জানান, চক্রের সদস্যরা পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে কাঁধব্যাগে করে এসব অস্ত্র নিয়ে আসতেন। এসব অস্ত্র বহনের জন্য তাদের কাছে জাল সনদ থাকতো। তারা ৪ থেকে ৫ জনের একটি চক্র সীমান্ত থেকে গাড়ি করে অস্ত্রগুলো ঢাকায় নিয়ে আসতো। এর পর বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করতেন। তাদেরকে দুই থেকে তিন লাখ টাকায় অস্ত্রসহ সনদ দিয়ে নামিদামি কোম্পানিতে নিরাপত্তা কর্মীর চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন।
তিনি আরও বলেন, পলাশ ২০১৬ সাল থেকে এই ধরনের অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান করে আসছিল। তিনি জানতেন দেশে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে অস্ত্রের চাহিদা রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে জাল সনদ তৈরি করে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করে আসছিলেন। জাল লাইসেন্স তৈরির জন্য যে সকল সরঞ্জাম প্রয়োজন তার সবগুলো আমরা তার কাছে পেয়েছি। পলাশ এ পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ জনের কাছে এসব জাল লাইসেন্স ও অবৈধ অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।
এ সময় তিনি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনকারী নিরাপত্তা কর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যারা বিভিন্ন সিকিউরিটি কোম্পানিতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে লাইসেন্স নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের সনদ সঠিক কিনা যাচাই করা প্রয়োজন। লাইসেন্স নিয়ে কোন সন্দেহ থাকলে বিষয়টি যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়। আমরা যখন অভিযান পরিচালনা করেছি তখন দেখেছি, বেশ কিছু ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা আমাদেরকে অসহযোগিতা করেছে। এ নিয়ে পরবর্তীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার কথাও জানান তিনি।