বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৫৫ পিএম
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ২৩:১৪ পিএম
গাছ কাটার প্রতিবাদে ধানমন্ডি আবাহনী মাঠের সামনে মানববন্ধন। প্রবা ফটো
ধানমন্ডিতে সড়কদ্বীপ উন্নয়নের নামে আবাহনী মাঠের বিপরীতে স্টার কাবাব থেকে জিগাতলা এলাকায় নির্বিচারে গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় ধানমন্ডি আবাহনী মাঠের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অবিলম্বে গাছ নিধন বন্ধ করে নতুন গাছ লাগানোর দাবি জানান এতে অংশগ্রহণকারীরা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এগুলোতে লেখা ছিল- গাছ আমাদের বন্ধু, গাছ সব মানুষের, কাঠ শুধু ব্যবসায়ীর, গাছ কেটে প্লাস্টিক শহর চাই না, গাছ কেটে উন্নয়ন চাই না, গাছগুলো বেঁচে থাক ইত্যাদি।
এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমানে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য কাজ করা উচিত। অথচ সেখানে রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে গাছ কেটে ঢাকাকে আরও দূষিত করার রাস্তা সহজ করছে সিটি কর্পোরেশন। এরইমধ্যে স্টার কাবাব থেকে জিগাতলা এলাকা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। উন্নয়নের নামে গাছ কেটে কেমন উন্নয়ন দেখাতে চাচ্ছে সরকার?
প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, আইন অনুযায়ী আমাদের সড়কের গাছ রক্ষার কথা। অথচ তার উল্টোটা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। আমরা উন্নয়নের বিরোধিতা করি না। সড়ক সম্প্রসারিত হোক, এটি আমরাও চাই। তবে গাছ কেটে যে উন্নয়ন সরকার দেখাতে চাইছে সেটি আমরা চাই না।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের একজন আমিরুল রাজিব বলেন, যে এলাকার গাছ কাটা হচ্ছে সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে বসে কথা বলে তারপর গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। উন্নয়নের বিপরীতে কেন বারবার গাছকে দাঁড় করাতে হবে?
সংস্কৃতি কর্মী অরুপ রাহী বলেন, সরকার কোন রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক চর্চার কারণে গাছ কাটছে এটা স্পষ্ট হওয়া দরকার। যারা নগরকে ভালোবাসে, দেশকে ধারণ করে তারা দেশের ক্ষতি চায় না। আমরা গভীরভাবে ঔপনিবেশিক। যার কারণে বড় বড় বিল্ডিং করা, হাওড়ে বাড়ি করা, গাছ কাটাকে উন্নয়ন বলতে শিখেছি। উন্নয়নের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর সুমন বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী যে বৃক্ষ নিধন করবে তার বয়স ও গাছের বয়স যোগ করে তার কারাদণ্ড হবে। যারা বোঝে না তাদের বোঝানো সম্ভব। কিন্তু যারা বোঝে তাদেরকে বোঝানো সম্ভব নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়বে। তারা সবুজের বদলে ধূসরের মধ্যে বড় হবে।
বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ঢাকা দক্ষিণের নগরপিতা লন্ডনে থেকে এসেছেন। কিন্তু লন্ডনে যে সড়কের ধারে ফুটপাত এবং গাছ লাগানোর জন্য রাস্তা ছোট করা হচ্ছে সেটি খেয়াল করলেন না। মূলত কিছু মানুষের স্বার্থ হাসিলের জন্য উন্নয়নের নামে এমন ন্যক্কারজনক নকশা ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।